দেশজুড়ে
অনুমতি দেবে না পুলিশ, তবুও শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করতে অনড় জামায়াত
আজহারুল ইসলাম শিমুল, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়ার পরও রাজধানীতে মহাসমাবেশ করার বিষয়ে অনড় জামায়াতে ইসলামী। শনিবার (২৮ অক্টোবর) শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশ বন্ধ করা যাবে না বলে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়েছে দলটি।
শুক্রবার বিকালে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রচার সহকারী মুহাম্মাদ সাইফের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অবিলম্বে সংসদ ভেঙে দিয়ে সরকারের পদত্যাগ করা, দেশে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও ওলামায়ে কেরামের মুক্তি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে শনিবার রাজধানীর শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুক্রবার জামায়াত রাজধানীর লালবাগ-বংশাল জোনে ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলন করে।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ও জোন পরিচালক মু. দেলাওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ও জোন সহকারী আহসান উল্লাহর পরিচালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জোনের সাতটি থানার আমিরবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, যতোই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করুন ২৮ অক্টোবর শাপলা চত্ত্বরে জনগণের দাবি আদায়ের জামায়াতে ইসলামীর মহাসমাবেশ বন্ধ করা যাবে না। দেশে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত নেই বলেই জনগণের দূর্ভোগ আজ চরম আকার ধারণ করেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে জনগণ দিশেহারা। বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি দেশের বরেণ্য ওলামায়ে কেরামগণ কারাগারে বন্দি।
মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি আমির হামজাসহ সব ওলামায়ে কেরামগণকে দেশের তৌহিদী জনতা মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছে জানিয়ে মাসুদ বলেন, আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আওয়ামী এই স্বৈরাচারের চূড়ান্ত পতন ঘটিয়ে বরেণ্য সব আলেমদেরকে মুক্ত করা হবে। এর জন্যই আগামীকাল ২৮ অক্টোবর রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে জামায়াত শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়ে ড. মাসুদ বলেন, জামায়াতের মতো সুশৃঙ্খল শান্তিকামী রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মসূচির অনুমতি দিতে কোনো টালবাহানা খুঁজবেন না। কোনো অজুহাত দিয়ে টালবাহানা করে আর জনগণকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। দীর্ঘদিন জনগণ দেখছে এক একটা নতুন নতুন পয়েন্ট অজুহাত ব্যক্ত করে জনগণের আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রশাসনকে স্মরণ করে দিতে চাই, আপনারা যদি রাষ্ট্রের বা প্রজাতন্ত্রের সত্যিকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হয়ে থাকেন, তাহলে জনগণের সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করুন। কারণ বাংলাদেশের জনগণের করের টাকায় আপনার বেতন হয়ে থাকে। তাই জনগণের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে এই শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নির্বিঘ্নে সফল করতে প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করবেন।
সভাপতির বক্তব্যে দেলাওয়ার হোসেন বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন ও অবৈধ স্বৈরাতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করতে হবে। নির্দলীয় কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।বাংলাদেশের আকাশে আজ কালো মেঘের ঘনঘটা দেখা যাচ্ছে। জোর পূর্বক জগদ্দল পাথরের মতো আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৫ বছর জাতির ঘাড়ে চেপে আছে। তারা দেশের গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান এক এক করে ধ্বংস করে দিয়েছে। জনগণের চলমান এই আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে দেশে সত্যিকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে।
দেলাওয়ার হোসেন শনিবার রাজধানীর শাপলা চত্ত্বরে মহাসমাবেশে দলে দলে যোগদান করার জন্য রাজধানীবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। আমাদের সমাবেশকে ঘিরে আওয়ামী লীগ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছেন। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই আমরা আল্লাহ ব্যথিত কাউকে ভয় পাই না। শত বাধা উপেক্ষা করে আমরা আমাদের মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন করবো ইনশাআল্লাহ।