আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদ
পথশিশুকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক: কথা না শোনায় সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের লেকের পানিতে চুবিয়ে ৭ বছরের এক ছিন্নমূল এক শিশুকে হত্যা করেছে তার ১৩ বছর বয়সী ‘দলনেতা’। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সেই কিশোর নেতা আসাদুলকে গ্রেপ্তার করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে আসাদুল।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকাল ৫ টার দিকে সাভারের নবীনগরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে এ হত্যাকান্ড ঘটে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে নিহতের নাম নীরব, বয়স ৭ বছর। তবে ছিন্নমূল হওয়ায় তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
স্মৃতিসৌধের ৪-৫ জন পথশিশু আছে, যারা ফুল বিক্রি করে বা ভিক্ষা করে। এই আসাদুল তাদের দলনেতার মত। বাকিদের কাছ থেকে টাকা আদায় করত আসাদুল। আসাদুলের কথা না মানায় নীরবকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেছে আসাদুল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসকল তথ্যই জানা গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার কিশোর আসাদুল সাভারের জামসিং এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে। সে স্থানীয় একটি স্কুলে ৭ম শ্রেনিতে পড়ালেখা করে। ঘটনার পর তার কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হলে প্রথমে তাকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার রহস্য খুঁজে পায় পুলিশ।
গণপুর্ত বিভাগের জাতীয় স্মৃতিসৌধের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, স্মৃতিসৌধের পেছন দিকের লেকের পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যুর সংবাদ পাই। ওইদিকে তেমন একটা দর্শনার্থী যায়না। পরে শিশুটিকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। নিহত শিশুটির সাথে গোসল করতে নামা আসাদুল নামে এক কিশোরের বক্তব্য রহস্যজনক হওয়ায় তাকে পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা হয়েছিলো। আসাদুল প্রথমে নিহত শিশুটিকে তার ছোট ভাই পরিচয় দিয়েছে। তার মা-বাবা কেউ নেই, থাকার জায়গা নাই এসব বিভ্রান্তিকর কথা বলেছে। পরে তার বাবা আসলে আমরা সত্যটা জানতে পারি।
তিনি আরও বলেন, শিশুটির মৃত্যুর পর তার লাশ কোলে নিয়ে জঙ্গলে ফেলে দেয় আসাদুল। তখন দর্শনার্থীরা দেখে ফেলার পর তাদের সন্দেহ হলে স্মৃতিসৌধে কর্তব্যরত আনসার সদস্যদের জানায়। আনসার সদস্যরা গিয়ে তাকে আটক করে। এর আগে যখন পানিতে নেমে ওই শিশুকে মারছিল আসাদুল তখন অন্য হকার শিশুরা দেখে ফেলে। তারা ঘটনার প্রতিবাদ করলে আসাদুল ওই শিশুকে নিজের ভাই বলে পরিচয় দেয় এবং বলে ভাইকে শাসন করছি। তাদেরও মারধরের ভয় দেখিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শিশুটি আমাদের হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়। সাভার মডেল থানা পুলিশ নিহতের সুরহাতাল করেছে।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুব্রত কুমার রায় বলেন, স্মৃতিসৌধ থেকে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জড়িত এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসাদুল নিহত শিশুর দলনেতার মত। আসাদুলের কথা না শোনায় আসাদুল এই কান্ড ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ কার্যক্রম চলমান আছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।