ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সন্তানের স্বীকৃতি দিতে অস্বীকারকারী পিতার সাথে মাকে ফের বিয়ে দিয়ে নজির গড়লেন মিলন নামে এক যুবক। আর আলোচিত এ বিয়েটি সম্পন্ন হয়েছে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে। ডিএনএ টেস্ট ও দেড়যুগের আইনি লড়াই শেষে বাবা-মায়ের বিয়ে দেন সন্তান।
জানা যায়, ঝিনাইদহের লক্ষ্মীপুর গ্রামের আজিজ মৃধার ছেলে ইসলাম ২০০০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি একই এলাকার মালা নামে একটি মেয়েকে প্রেম করে বিয়ে করেন। স্থানীয় মৌলভীর কাছে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে করলেও তাদের কাবিন করা হয়নি তখন। ২০০১ সালের ২১ জানুয়ারি তাদের একটি পুত্র সন্তান হয়। যার নাম রাখা হয় মিলন। কিন্তু মিলনের জন্মের পর স্ত্রী ও সন্তানকে অস্বীকার করেন ইসলাম। এ ঘটনায় মালার বাবা মামলা করলে ডিএনএ টেস্টে সন্তানের পরিচয় নিশ্চিত হয়। তারপরেও ইসলাম স্ত্রী ও তার সন্তানের মর্যাদা দিতে অস্বীকার করেন।
ফলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ মামলায় ১৮ বছর আগে ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। ইসলাম হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে আপীল করলেও পূর্বের রায় বহাল থাকে। এরপর সুপ্রিম কোর্টে আপিল রিভিউ করেন ইসলাম।
তার আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল শুনানির সময় বিচারকদের কাছে মালা ও মিলনকে স্বীকৃতি দেবার কথা জানান। তিনি স্বীকার করে নেন মালা ইসলামের স্ত্রী এবং মিলন তাদের সন্তান। যা ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণিত। তাদের পুনরায় বিয়ে দেয়ার শর্তে জামিনও প্রার্থনা করেন ইসলামের আইনজীবী।
এরপর আদালতের নির্দেশে গত বুধবার (৩১ জুলাই) যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে ইসলাম ও মালার দ্বিতীয় দফা বিয়ে সম্পন্ন হয়। দাঁড়িয়ে থেকে এ বিয়ে দেন তাদের সন্তান মিলন। কারাগারেই এ বিয়ের কাবিনও সম্পন্ন করা হয়।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবু তালেব বলেন, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ইসলাম আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত মালাকে স্ত্রী ও মিলনকে সন্তানের স্বীকৃতি দেয়ার শর্তে জামিন দেয়া হবে বলে জানায়। আদালতের শর্তে ইসলাম রাজি হওয়ায় জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে বুধবার কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সুপার, দুই পক্ষের আত্মীয়স্বজন ও তাদের ছেলে মিলনের উপস্থিতিতে ইসলাম ও মালার বিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন জামিনে মুক্তির অপেক্ষায় ইসলাম।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৯ আগস্ট এ বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।