দেশজুড়ে
কোথাও গণপিটুনি দেখলে ফোন করুন ৯৯৯-এ
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সম্প্রতি দেশে বেড়ে গেছে গণপিটুনির ঘটনা। ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর এখন প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গণপিটুনিতে মানুষ হত্যার খবর আসছে। নিহতদের অধিকাংশই মানসিক ভারসাম্যহীন কিংবা বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী, যারা অন্যদের কাছে সঠিকভাবে নিজের বিষয় ব্যাখ্যা করতে পারেন না। সম্প্রতি এ বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন শরিফুল হাসান নামের এক লেখক ও মানবাধিকারকর্মী। তাঁর সেই লেখাটি প্রকাশিত হলো এখানে-
‘দেশের ১৭ কোটি মানুষের কাছে করজোড়ে বলছি, আপনারা সবাই সচেতন হন। নয়তো কাল শুনবেন আপনারই কোন আত্মীয়কে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কী ভয়াবহ ঘটনা দেখুন! এর মধ্যে আরও তিনজনকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেছি। মৌলভীবাজারে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে ষাট বছরের এক বৃদ্ধকে। সাভারে এক নারীকে। কেরানীগঞ্জে চল্লিশোর্ধ এক যুবক। গত চারদিনে এভাবে সাতজনকে গনপিটুনিতে হত্যা করা হযেছে। ছয় মাসে ৩৬ জনকে।
কাদের পিটিয়ে মারা হচ্ছে একবার দেখেন! নারী, মানসিক রোগী, প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধা। আমরা কী ভয়াবহ অসুস্থ এক জাতিতে পরিনত হলাম! আমরা মাকে সন্তানহারা করছি। সন্তানকে করছি মা হারা! কিন্তু কেন? কোন গুজবে? কেউ অচেনা হলেই, কেউ নিজের মতো করে হাঁটাচলা করলেই পিটিয়ে মারতে হবে।
কী ভয়াবহ ঘটনা! প্রকাশ্যে রিফতাকে কুপিয়ে হত্যা দেখে চমকে উঠি আর নিজেরাই পিটিয়ে মানুষ হত্য করি। কেন রে ভাই? আচ্ছা দেশের ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে কী একজনও আছেন যিনি বলতে পারবেন তার সন্তানকে ছেলেধরারা ধরে নিয়ে গেছে। তাহলে কেন এই গুজব? একবার ভাবেন। প্লিজ আশেপাশে কোথাও গনপিটুনি দেখলে আপনি অন্তত অংশ নিয়েন না। বরং প্রতিরোধ করেন। পারলে পুলিশে কল দেন। কাউকে সন্দেহ হলে পুলিশকে জানান।
গতকাল বলেছিলাম। আজও আবার বলি। রাষ্ট্রীয় জররুী সেবা ৯৯৯ আছে। যে কোন ঘটনায় তাদের ফোন করুন। কিন্তু দয়া করে কাউকে মারবেন না। চোখের সামনে কাউকে মারতে দেখলে প্রতিবাদ করবেন। প্লিজ চলুন সবাই সচেতন হই। সড়ক দুর্ঘটনা, ডেঙ্গু নানা রোগে এমনি আমরা মারা যাচ্ছি। দয়া করে নিজেরা নিজেদের পিটিয়ে মারবেন না।
মানুষ হত্যার চেয়ে ভয়ঙ্কর অপরাধ আর নেই। আপনাদের সবার পায়ে পড়ি। সতর্ক হন। সারাদেশে সবাই সোচ্চার হন। অসহায় নারী, প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধদের বাঁচান। রাজনীতিবিদ, প্রশাসন, সাধারণ মানুষ সবাইকে এ বিষয়ে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। চলুন আমরা এই দেশটাকে বাঁচাই। দেশের মানুষকে বাঁচাই।’