দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

বারবার হাত বদলে ৪৬ টাকার আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক:নিত্যপণ্যের পাশাপাশি অস্থিরতা আলুর বাজারেও। খুচরা বাজার পর্যন্ত গিয়ে প্রতিকেজি আলুর যৌক্তিক সর্বোচ্চ দাম ৪৬ টাকা। অথচ কৃষক থেকে ক্রেতা পর্যন্ত ৫ বার হাত বদলের পর সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। আর মাঝখানের অসাধুদের তৎপরতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ না থাকায় যা ধীরে ধীরে লাগামহীন।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হিসাবে, প্রতিকেজি আলুর উৎপাদন খরচ ১২ থেকে ১৩ টাকা। এরপর হিমাগার ভাড়া, পরিবহনসহ সব খরচ বাদ দিয়ে খুচরা বাজারে আলুর যৌক্তিক দাম সর্বোচ্চ দাঁড়ায় ৪৬ টাকায়। অথচ কৃষক থেকে মজুতদার, ফড়িয়া, আড়তদার, পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ী হয়ে সেই আলু ক্রেতার ব্যাগে যাচ্ছে ৭০ টাকায়।

পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, আলু সংরক্ষণকারী ব্যবসায়ী ও হিমাগারের ফড়িয়া ব্যবসায়ীরাই নিয়ন্ত্রণ করে আলুর দাম। যদিও বিষয়টি স্বীকার করতে চান না কেউ।

কৃষক বলছেন, উৎপাদন খরচের সাথে লাভ যোগ করে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। অন্যদিকে বড় বড় ব্যবসায়ীরা টাকা দিয়ে আলু মজুত করে রাখেন বলেও অভিযোগ তাদের। অবশ্য হিমাগার ম্যানেজাররা, আলু কেনা-বেচায় ফড়িয়া থাকার কথা অস্বীকার করেন। এদিকে, আড়তদারদের দাবি, বস্তা প্রতি মজুতদারেরা ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা লাভ করছেন।

মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম কমানো ও সরকারের কঠোর নজরদারি বাড়ানো হলে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব বলে মনে করছেন ক্রেতা–বিক্রেতারা।

একজন আলু ব্যবসায়ী বলেন, ‘যারা স্টক করে, বড় বড় ব্যবসায়ী, তাদের কারসাজিতেই বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। সরকার যদি এই সিন্ডিকেট ভাঙতে পারে তাহলে দামটা নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে।’

আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে হিমাগার থেকে বাজার পর্যন্ত অভিযান চালানো সব সময় সম্ভব হয়না। তবে কঠোরভাবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

বগুড়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, ‘কোল্ড স্টোরেজে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন নামে ভুয়া তথ্য দিয়ে আলু সংরক্ষণ করছেন, যার কোনো সত্যতা পাইনি। জরিমানা করেও কোনো প্রভাব পড়ছেনা। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অনিয়ম পেলে, সেই হিমাগার বন্ধের সুপারিশসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বগুড়ায় পাকড়ি, কার্ডিনালসহ অন্তত ৩০ জাতের আলুর আবাদ হয়। গত বছর ৫৩ হাজার ২১৫ হেক্টর জমি থেকে উৎপাদন হয়েছে ১২ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন আলু। জেলার ৪২টি হিমাগারে ধারণ ক্ষমতা ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৬২০ মেট্রিকটন।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close