দেশজুড়ে

‘মোবাইল ছিনতাইয়ের জেরে’ রিফাত খুন!

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ  নৃশংসভাবে খুন হওয়া রিফাত শরীফেরও ছিল একটি ছিনতাইকারী চক্র। চক্রটির কাজ ছিল মেয়েদের মাধ্যমে যুবকদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ডেকে এনে মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়া। আর এমন একটি ঘটনার মধ্য দিয়েই হত্যাকাণ্ডের সূত্র তৈরি হয়েছিল বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বরগুনা জেলা পুলিশের এক সদস্য জানান, হেলাল নামের এক ব্যক্তির মোবাইল ফোন ছিনতাইকে কেন্দ্র করে রিফাত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

তিনি জানান, ২৬ জুন রিফাতকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়। ঘটনার দুইদিন আগে ২৪ জুন হেলাল নামে এক ছেলের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় রিফাত শরীফ। হেলাল রিফাত শরীফের বন্ধু হলেও নয়ন বন্ডের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। আর সেই মোবাইল ফোন উদ্ধারে রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির দ্বারস্থ হন নয়ন বন্ড।

পরে রিফাত শরীফের কাছ থেকে মোবাইল উদ্ধার করে ২৫ জুন দেখা করে নয়নকে ফেরত দেন মিন্নি। কিন্তু মোবাইল উদ্ধার করতে গিয়ে রিফাতের হাতে মারধরের শিকার হন মিন্নি। মোবাইলটি নয়নকে ফেরত দেওয়ার সময় মারধরের প্রতিশোধ নিতে স্বামী রিফাতকে মারধর করতে বলেন তিনি। সে অনুযায়ী ওইদিন সন্ধ্যায় বরগুনা কলেজ মাঠে মিটিং করে রিফাত শরীফকে মারধরের প্রস্তুতি গ্রহণ করে নয়নের ০০৭ বন্ড বাহিনী।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, হামলার আগ মুহূর্তে রিফাত শরীফের সঙ্গে মিন্নি কলেজ থেকে বের হন। সে সময় কলেজের সামনে রিফাতকে মারধরের পরিকল্পনা অনুযায়ী কোনো প্রস্তুতি দেখতে না পেয়ে সময় ক্ষেপণের জন্য রিফাতকে নিয়ে আবার কলেজে প্রবেশ করেন তিনি।

এর কিছুক্ষন পরই বন্ড বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য একত্রিত হয়ে রিফাতকে মারধর করতে করতে কলেজের সামনের রাস্তা দিয়ে পূর্ব দিকে নিয়ে যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী রিফাতকে মারধর করা হচ্ছে দেখে মিন্নি তখন স্বাভাবিকভাবেই হাঁটছিলেন।

কিন্তু পরিকল্পনার বাইরে গিয়ে রিফাতকে মারধর শুরু করলে নয়নকে থামাতে তখনই এগিয়ে আসেন মিন্নি। মূলত রিফাতকে মারধরের অভিযোগ থেকে নয়নকে বাঁচাতেই বারবার প্রতিহত করার চেষ্টা করতে থাকেন তিনি। কিন্তু সেই প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হন মিন্নি।

বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মারুফ হোসেন বলেন, পাঁচ দিনের রিমান্ডে থাকা মিন্নি প্রথম দিনেই রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। আলোচিত রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাতের স্ত্রী মিন্নি বর্তমানে গ্রেফতার হয়ে ৫ দিনের রিমান্ডে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। ১৬ জুলাই দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টার দিকে মিন্নিকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

২৬ জুন প্রকাশ্য দিবালোকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডে স্ত্রী মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। পরে বরিশাল শেরে-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাতের মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close