দেশজুড়ে
তফসিল প্রত্যাখান করে রাস্তায় নামবে বিএনপি
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: আজ সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই তা প্রত্যাখ্যান করে রাস্তায় নামবে বিএনপি।
তফসিল ঘোষণার পরপরই তা প্রত্যাখান করে ঝটিকা মিছিল এবং সড়ক অবরোধের পাশাপাশি তফসিল ঘোষণার পরদিন নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের প্রস্তুতি রাখতেও নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচিও চলবে। একতরফা তফসিল ঘোষণা হলে আজ বুধবার ইসলামী আন্দোলন নির্বাচন কমিশন অভিমুখে গণমিছিল করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে।
নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শর্তহীন সংলাপের আহ্বান জানিয়ে বড় তিনটি দলকে চিঠি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একে ইতিবাচকভাবে দেখছেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে এখন আর শর্তহীন সংলাপের পরিবেশ নেই বলেও মনে করছেন তাঁরা।
দলের একটি সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া চিঠির একটি আনুষ্ঠানিক জবাব দিতে পারে বিএনপি।
গত সোমবার বিকেলে এই চিঠি পাওয়ার পর বিএনপি এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে তারা চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে।
বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত দলগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে তাঁরা পরিকল্পনা তৈরি করবেন এবং পদক্ষেপ নেবেন।
বৈঠকগুলোতে তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় নেমে প্রতিক্রিয়া দেখানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন কার্যালয় ঘেরাওয়ের বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের একটি সূত্র জানায়, তফসিল-পরবর্তী কর্মসূচি জোরালোভাবে পালনের বিষয়ে কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। এত দিন দল ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকে আত্মগোপনে ছিলেন। এখন তাঁদের প্রকাশ্যে আসার মানসিকতা তৈরি করার কথা বলেছেন তিনি।
এও বলেন, প্রয়োজনে রাজপথ থেকে গ্রেপ্তার হবেন। কিন্তু মাঠে থাকতে হবে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী গতকাল এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তফসিল নাটক বন্ধ করুন। নইলে সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলতে থাকবে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের আজ বুধবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার কথা। আর আজ থেকে পঞ্চম দফায় বিএনপির ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হচ্ছে। এ অবস্থায় তফসিল ঘোষণা হলে বিএনপির আন্দোলনের গতি কোন দিকে যাবে তাও পরিষ্কার হবে। রাজনীতিতে নির্বাচনকেন্দ্রিক মেরুকরণও শুরু হবে তফসিল ঘোষণার পর।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু কালের কণ্ঠকে বলেন, আন্দোলন যে পর্যায়ে গেছে, জনগণ যেভাবে আন্দোলনকে সমর্থন দিচ্ছে তাতে তফসিল ঘোষণার পর মানুষ নিজ থেকেই রাস্তায় নেমে আসবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান কালের কণ্ঠকে বলেন, সংলাপ কিন্তু শুধু সংলাপের জন্য নয়। গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় এর একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে এবং সেটি বাস্তবে অর্জন করতে হলে তার জন্য দুটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমটি হচ্ছে, একটি অনুকূল পরিবেশ। অন্যটি হচ্ছে, পারস্পরিক আস্থা। বাংলাদেশে আজ এই দুটিই সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। কাজেই অর্থবহ সংলাপ করতে হলে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের মিথ্যে মামলায় জেলে পুরে রেখে তা সম্ভব নয়।
মঈন খান বলেন, ‘এই মুহূর্তে সরকার তড়িঘড়ি করে একদলীয় নির্বাচনের মানসে একতরফা নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করলে তা শুধু সংলাপের সম্ভাবনাকে দূরীভূত করবে না, বরং দেশের সার্বিক রাজনীতির পরিবেশকেও অনেক বেশি উত্তপ্ত করে তুলবে।’