প্রধান শিরোনামশেয়ার বাজার
সূচকের পাশাপাশি কমেছে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: গত সপ্তাহের শেষ দিকে পুঁজিবাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিল। কিন্তু চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই আবারো নিম্নমুখিতা পরিলক্ষিত হচ্ছে পুঁজিবাজারে। দুই দিন ধরে শেয়ার বিক্রির চাপে পয়েন্ট হারাচ্ছে সূচক। পাশাপাশি বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও কমেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর পর প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্সে ৭ মিনিট পর্যন্ত পয়েন্ট যোগ হলেও পরে তা কমতে থাকে। দিন শেষে ৩৯ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৫৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৬ হাজার ৪০৬ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বিএটিবিসি, ব্র্যাক ব্যাংক, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, গ্রামীণফোন, পূবালী ব্যাংক, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস, বিএসআরএম লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক ও ফরচুন সুজের শেয়ারের।
অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল ১৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩১৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের দিন শেষে যা ছিল ২ হাজার ৩৩০ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৮৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের দিন শেষে যা ছিল ১ হাজার ৩৯৭ পয়েন্টে।
ডিএসইতে গতকাল ৮২২ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল ৮৯৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৮০টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ৩৬টির, কমেছে ৩২৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৯টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।
বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, মে মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি টাকার অবমূল্যায়নের কারণে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি ও মুদ্রাস্ফীতি প্রশমিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে মুদ্রানীতিতে আরো নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার সম্ভাবনা নিয়েও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ কারণে অনেক বিনিয়োগকারীই আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।
এদিকে খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২০ দশমিক ৪ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বিবিধ খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ দখলে নিয়েছে ব্যাংক খাত। ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। চতুর্থ অবস্থানে থাকা বস্ত্র খাতের দখলে ছিল লেনদেনের ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। এছাড়া ওষুধ ও রসায়ন খাতের দখলে ছিল মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ৮ শতাংশ।
গতকাল শুধু বিবিধ খাত বাদে বাকি সব খাতেই নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৯ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে সিরামিক খাত থেকে। অন্যদিকে বিবিধ খাত থেকে গতকাল দশমিক ৩ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে।
অন্যদিকে সিএসইর নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ৮৩ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ২২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল প্রায় ১১ হাজার ৩১৩ পয়েন্টে। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ১৪০ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৭২৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১৮ হাজার ৮৬৮ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৮৭টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৫টির, কমেছে ২২৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৭টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ৫৭ কোটি ১৮ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে এ লেনদেন ছিল ২৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা।