দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
২ মামলায় খালেদা জিয়ার স্থায়ী জামিন
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মানহানি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের দুই মামলায় তাকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) এ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
এ দুই মামলা নিয়ে যত কথা:
গত ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ধর্ম নিরপেক্ষতার মুখোশ পরে আছে আসলে দলটি ধর্মহীনতায় বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগের কাছে কোনো ধর্মের মানুষ নিরাপদ নয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করেছে। হিন্দুদের ওপর হামলা করেছে।
খালেদা জিয়ার ওই বক্তব্য যেমন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে, তেমনি হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে শ্রেণিগত বিভেদ সৃষ্টি করেছে- এমন অভিযোগ তুলে ওই বছরের ২১ অক্টোবর জেননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী বাদী হয়ে মামলা করেন।
অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি আদালতে যে মানহানির মামলা হয় তার বাদীও এ বি সিদ্দিকী।
২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ সরকার নিয়ে কটূক্তি করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
দুই মামলাতেই ২০১৮ সালের ৩০ জুন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে শাহবাগ থানা পুলিশ। দুই তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ২০২১৯ সালের ২০ মার্চ খালেদার জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
এরপর খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানান তার আইনজীবীরা। এর পর চলতে থাকে মামলা চলার গতি। অবশেষে এ দুই মামলায় তিনি স্থায়ী জামিন পেলেন।
তার যতসব মামলা:
এর আগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাশকতা ও রাষ্ট্রদ্রোহসহ ১১টি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ২০ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করেন আদালত। বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করে জমা দেয়া আলাদা আবেদন আমলে নিয়ে আদালতে এ আদেশ দেন। বুধবার (৮ জুন) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম এমরুল কায়েশ শুনানি মুলতবি করে এ আদেশ দেন। এদিন এসব মামলায় খালেদা জিয়ার হাজিরার দিন ধার্য থাকলেও অসুস্থতাজনিত কারণে তিনি আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি।
১১টি মামলার মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণের বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। অপর ১০ মামলায় অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য ছিল।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ১১টি মামলার মধ্যে ২০১৫ সালের প্রথম তিন মাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১০টি মামলা হয়। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকার আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাটি করা হয়।
২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রলবোমা হামলা হয়। এতে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ ও একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওই ঘটনায় পরদিন খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা হয়।
এ ছাড়া ২০১৫ সালে দারুস সালাম থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে আটটি মামলা করা হয়। এই আট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাটকো, নাইকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে ৩টি মামলা ঢাকার আরও ৩টি আদালতে বিচারাধীন। পাশাপাশি জাতীয় পতাকা অবমাননা ও ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে করা দুটি মামলা ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন।
বিএনপির লাগাতার আন্দোলনের সময় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় হুকুমের আসামি করে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় বিএনপির চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা হয়।