দেশজুড়েস্বাস্থ্য

আবারও ‘একপাক্ষিক সাজানো নির্বাচনে’র মাধ্যমে সন্ধানীর কমিটি গঠনের অপচেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও স্যোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (২ জুন) একটি একপাক্ষিক সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সন্ধানী’র ২০২১-২২ সেশনের কেন্দ্রীয় পরিষদের কমিটি। উক্ত কমিটি গত ১২ জানুয়ারী ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে তথাকথিত সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে অসাংবিধানিক ভাবে গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পূর্ণ অনুরূপ ভাবে গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ওই নাটকীয় নির্বাচনের সভাপতিত্ব করেন সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সভাপতি ও সন্ধানীর অচলাবস্থা নিরসন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. তোসাদ্দেক হোসেন সিদ্দিকী।

জানা যায়, কমিটির নির্বাচন ও সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সদস্য ও সন্ধানীর অচলাবস্থা নিরসন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খান, ডা. মোশারফ হোসেন মুক্ত, অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মো. সালেক, ডা. মনসুর আহম্মদ, ডা. নীহার রঞ্জন রায়, ডা. মাহমুদুজ্জামান রিপন প্রমুখ। ১৯ জনের সমন্বয়ে গঠিত উপদেষ্টা কমিটির একাংশ ওইদিন উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনের তারিখ নির্বাচন কমিশনার ডাঃ মনসুর আহমেদ এর স্বাক্ষর বিহীন এক পত্রে ১ দিন পূর্বে জানানো হয়৷ সন্ধানীর মতো জাতীয় প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অচলাবস্থা নিরসনের দায়িত্ব যাদের দেয়া হয়েছিলো, তারাই অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এই বিষয়ে এ বছরের ৭ জানুয়ারী ঢাকার সন্ধানী ভবনে আয়োজিত বার্ষিক সম্মেলনে নির্বাচিত সভাপতি আব্দুর রউফ উল্লাস ও সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজার বক্তব্য জানতে চাইলে তারা জানান, তারা এই নাটকীয় নির্বাচনকে ১টি সাজানো লোক দেখানো পরিবেশনা ছাড়া অন্য কিছুতে আখ্যায়িত করছেন না।

বর্তমানে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধীনে ৫২টি মেডিকেল কলেজে পেশাগত পরীক্ষা চলমান। এই পরীক্ষার মধ্যে মেডিকেল ছাত্র-ছাত্রী দ্বারা পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সন্ধানীর কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন এর তারিখ ধার্য করা একটি পূর্ব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। নির্বাচনে সকলকে অংশগ্রহণ করা হতে বিরত রাখার জন্যই এই কুপরিকল্পনা বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের।

কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রউফ উল্লাস বলেন, এটা কেমন নির্বাচন যেখানে অবিকল ফরিদপুরে প্রচারিত কমিটির মত কমিটি গঠন করা হয়! মোট ভোটার সংখ্যা কত, প্রতিটি পদের জন্য কতজন পদপ্রার্থী, কোন প্রার্থী কতটি ভোট পেয়েছে, সর্বোপরি কি কি যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রার্থী ও ভোটার তালিকা বাছাইকরণ হয়েছে সেটার কোনরূপ সুস্পষ্ট প্রমাণ ছাড়াই এই নির্বাচনের ব্যাবস্থা করা হয়। মূলত বহিরাগত ২০-৩০জন ব্যক্তিকে এ্যাপ্রোন পরিয়ে মেডিকেল শিক্ষার্থী সাজিয়ে এই পাতানো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

অভিযোগ আছে, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অস্ত্রধারী কিছু ব্যক্তিদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে/ হস্তক্ষেপে সন্ধানীর কমিটি গঠিত হয়, যেখানে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের নিজেদের ইউনিট ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল থেকে সাংগঠনিক সহিংসতার কারণে বন্ধ আছে।

একাধিক উপদেষ্টা এমন পাতানো নির্বাচনের বিপক্ষে মতামত প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, বিগত ৪৫ বছর ধরে প্রতিটি মানুষের রক্ত ও শ্রমের বিনিময়ে আজকের এই স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত সংগঠন সন্ধানী, কোন কতিপয় ব্যক্তিবর্গের কুক্ষিগত সম্পদ বা স্বেচ্ছাচারীতার স্থান নয়।

সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদ (২০২১-২২) সালের কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং অতি দ্রুত সন্ধানীর সকল সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গৃহীত হবে।

/এনএস

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close