প্রধান শিরোনামসাভারস্থানীয় সংবাদ
সাভারে নারীর খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সাভারে খালের পাশ থেকে অনেকটা সচ্ছ পলিথিনে মোড়ানো মাথা ও এক হাত-দুইপা বিহীন এক নারীর খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (৩১) সন্ধ্যায় সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের সাদাপুর এলাকার একটি খালের পাশে অর্ধ পানিতে পলিথিনে মোড়ানো নারী এই অংশগুলো পাওয়া যায়। এরআগে অজ্ঞাত এক নারীর ধামরাইয়ে কোমড় থেকে দুই পা সহ নীছের অংশ ও ফরিদপুরের কোতয়ালী থানায় মাথা ও একটি হাত পাওয়া গিয়েছিলো।
পুলিশ জানায়, স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানকার খাল থেকে পলিথিনে মোড়ানো একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক সুরতহালে দেখা যায় এটি একটি নারীর মরদেহ। যার পেট থেকে নিচের অংশ নাই। বাম হাতটিও দেহের সাথে ছিল না। মরদেহের মাথা না থাকায় পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না।
সাভার মডেল থানার এস আই আব্দুল হক বলেন, প্রাথমিকভাবে দেখা ধারনা করা হচ্ছে, নিহত নারী খন্ডিত অংশ ৫ থেকে ৭ দিন আগের। ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। এছাড়া জানতে পেরেছি এরআগে ধামরাইয়ে খন্ডিত নারীর নীচের অংশ পাওয়া গিয়েছিলো। সেই থানায় তদন্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে।
অন্যদিকে গত ২৫ জানুয়ারি দুপুরে পাশ্ববর্তী ধামরাইয়ে কুল্লা ইউনিয়নের বড় চন্দ্রাইল একই ধরনের পলিথিনে মোড়ানো নারী কোমড় থেকে নীচ পর্যন্ত অর্থাৎ দুই পা সহ খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার হয়।
এ বিষয়ে ধামরাই থানার এস আই সাইদুজ্জামান বলেন, ২৫ জানুয়ারি স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে কুল্লা ইউনিয়নের বড় চন্দ্রাইল এলাকায় একজনের বাড়ির পাশে ইটের স্তুপের থেকে সচ্ছ পলিথিনে মোড়ানো নারীর কোমড় থেকে দুইপা সহ নীচের অংশ পাওয়া যায়। পরে সিআইডি দল খন্ডিত মরদেহ ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে। রিপোর্ট এখনো হাতে পাইনি ও খন্ডিত মরদেহের পরিচয় সনাক্ত সম্ভব হয়নি। তবে জানতে পেরেছি, ২৫ জানুয়ারি রাতেই ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানায় অজ্ঞাত নারীর শুধু মাথা ও একটি হাত উদ্ধার করেছিলো। নীচের অন্য কোন অংশ পাওয়া যায়নি সেখানে।
এদিকে ২৫ জানুয়ারি সকালে ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানার কৈজুড়ি ইউনিয়নের বিলনালিয়া গ্রামের একটি বিলের মাঝখানে পেঁয়াজ ক্ষেত থেকে অজ্ঞাত নারীর একটি হাত ও মাথা উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সে ঘটনায় ২৮ জানুয়ারি কোতয়ালী থানায় পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানার এস আই জাকির হোসেন বলেন, ২৫ জানুয়ারি সকাল ১১ টার দিকে বিলনালিয়া গ্রামের বিলের মাঝখানে অজ্ঞাত নারীর শুধু মাথা ও একটি হাত উদ্ধার করা হয়েছে। তাও দগ্ধ অবস্থায়। হয়তো নারীকে দেখে যাতে কেউ চিনতে না পারে সেজন্য খুনিরা পেট্রোল দিয়ে মাথা ও হাত পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলো। তবে জানতে পেরেছি, ২৫ জানুয়ারি ধামরাইয়ে অজ্ঞাত নারীর খন্ডিত অংশ ও ৩১ জানুয়ারি সাভারে আরো কিছু খন্ডিত অংশ পাওয়া গেছে। যেমন কোতয়ালী থানায় মাথা ও বাম হাত উদ্ধার হয়েছে। ধামরাইয়ে কোমড় থেকে দুই পা ও সাভারে ডান হাত ও বুকের অংশ পাওয়া গেছে। প্রাথমকিভাবে দেখলে সবগুলো অংশ একই ধরনের পলিথিনে মোড়ানো ছিলো। সে হিসেবে প্রাথমিকভাবে ধারনা হয় সবগুলো অংশ একই নারীর। তবে তিনটি অংশের ডিএনএ প্রতিবেদন ছাড়া নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। হয়তো খুনিরা নারী পরিচয় গোপন রাখতে হত্যা পর লাশ টুকরো করে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দিয়েছে।
/এন এইচ