দেশজুড়ে
মুরাদকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে যা জানালেন সেতুমন্ত্রী
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে ডা. মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, সংসদ সদস্য পদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত স্পিকারের।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় প্রতিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন তার পক্ষে পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তরে জমা দেন। সচিবের পক্ষে তার একান্ত সচিব মাহমুদ ইবনে কাসেম পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ করেন।
দুপুর সাড়ে ১২টায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে পাঠান ডা. মুরাদ হাসান।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পদত্যাগপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে।
এদিকে, পদত্যাগপত্রে মুরাদ হাসান তার মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পাওয়ার যে তারিখ উল্লেখ করেছেন সেখানেও ভুল করেছেন। তিনি ২০১৯ সালের ১৯ মে তথ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছে। কিন্তু পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন ১৯ মে ২০২১!
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে মুরাদ হাসান লেখেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্ব-শ্রদ্ধেয় সালাম নেবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গত ১৯ মে ২০২১ তারিখের স্মারকমূলে আমাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমি আজ ৭ ডিসেম্বর ২০২১ সাল থেকে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক।’
‘এমতাবস্থায়, আপনার নিকট বিনিত নিবেদন, আমাকে অদ্য ৭ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার লক্ষ্যে পদত্যাগপত্র গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি।’
এর আগে সকালে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। আগামী কার্যনির্বাহী সভায় তার বহিষ্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
হানিফ বলেন, ‘মুরাদ হাসানকে এরই মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে দলের আগামী কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।’
গত কয়েকদিন ধরেই বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আলোচনায় ছিলেন এ প্রতিমন্ত্রী। বিভিন্ন সময় আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন মুরাদ হাসান।
সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান ও নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেত্রীদের নিয়েও আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। এরপর থেকেই মুরাদ হাসানের পদত্যাগের দাবি আরও জোরালো হয়ে ওঠে।
এরই মধ্যে গত রোববার মধ্যরাতে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে মুরাদ হাসানের আপত্তিকর ফোনালাপ ফাঁস হয়। মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়ে যায় এটি।