বিশেষ প্রতিবেদনসাভারস্থানীয় সংবাদ

সাভারে আমিনবাজারে হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসা, ফটকে ময়লার স্তুপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাভারের আমিনবাজারের ২০ শয্যা হাসপাতালটিকে ইতিমধ্যে বরাদ্দ করা হয়েছে ডেঙ্গু সনাক্তকরণ পরীক্ষা ও চিকিৎসাকেন্দ্র হিসেবে। গত ১ আগস্ট থেকে এখানে প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগী বা ডেঙ্গুর লক্ষণধারীরা চিকিৎসাসেবা নিতে আসছেন। যেখানে বিনামূল্যে করানো হচ্ছে ডেঙ্গুর পরীক্ষা। কিন্তু হাসপাতালের সামনেই থাকা ময়লার স্তুপ এ উদ্যোগকে ভালোর চাইতে নিয়ে যাচ্ছে খারাপের দিকে। এ ময়লার স্তুপ সড়ানোর জন্য চেষ্টা করে গেলেও এখনো সফলতার দেখা মেলেনি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

সরেজমিনে আমিনবাজারে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় হাসপাতালের সামনে ময়লার স্তুপ। এ ময়লার স্তুপে রয়েছে মশা-মাছির আবাসস্থল। নারকেলের খোসা, খাবারের ওয়ান টাইম প্যাকেট, শোলার বক্স, প্লাস্টিকের বোতলসহ কি নেই সেখানে। বৃষ্টির পানি জমে থাকার সুযোগ রয়েছে যেখানে। এছাড়া প্রবেশ পথের পাশেই রাখা হয়েছে রান্নার লাকড়ি।

ময়লার স্তুপ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সেবা নিতে আসা রোগীরা। সাভারের আমিনবাজার নিবাসী বড়দেশী এলাকার বাসিন্দারা জানান, হাসপাতালের সামনে ময়লার যে অবস্থা সেখানেই তো এডিস মশার বাড়িঘর। ডেঙ্গুর চিকিৎসা করাতে এসেছি, নাকি ডেঙ্গু বাঁধাতে এসেছি আল্লাহ মালুম। এছাড়া ময়লার দূর্গন্ধ তো আছেই। মশার যন্ত্রণায় দুইটা মিনিট দাঁড়ানো যায়না হাসপাতালের বাইরে।

এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সায়েমুল হুদা বলেন, এমনিতেই এখন প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০০-১৫০ রোগী আসছেন এই হাসপাতালে। ময়লার স্তুপের কারণে এই অবস্থা আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। চিকিৎসাসেবা নিতে এসে মানুষ যদি অসুস্থ হয়ে যায় তাতো হবেনা। ২ সপ্তাহ আগে থেকে আমি সব জায়গায় চিঠি পাঠিয়েছি, আমি ইউএনও মহোদয়কে বলেছি, আমি মেয়র মহোদয়কে বলেছি, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে অবহতি করেছি। আমি সবাইকেই জানিয়ে রেখেছি। কিন্তু এখনো এর সুরাহা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই মাসে ১৩৬ জন পরীক্ষার পর ১০ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছে, যারা ইতমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আমিনবাজারে ১২ জনের পরীক্ষায় ১ জন পজেটিভ পেয়েছি সেও ভালো আছে। বেসরকারী ভাবে যারা বিভিন্ন হাসপাতালে পরীক্ষা করিয়েছেন তাদের তথ্য তো আমাদের কাছেনাই।

ডাঃ সায়েমুল হুদা বলেন, ডেঙ্গু পরীক্ষা একেবারে বিনামূল্যে চলছে। ৩০০ টাকা সরকারি ফি নির্ধারিত থাকলেও সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও আমিনবাজার ২০ শয্যা হাসপাতালে বিনামূল্যে ডেঙ্গু টেস্ট করা হচ্ছে। ডেঙ্গু পরীক্ষা করে ধরা পড়লে ঠিকমত চিকিৎসা সেবা নিলে দ্রুতই রোগী সুস্থ হয়ে যায়।

আমিনবাজার ২০ শয্যা হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড করার কথা থাকলেও ডেঙ্গুর প্রকোপে সেটিকে ডেঙ্গুর জন্যই বরাদ্দ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। শুধু আমিনবাজারই নয় রাজধানীর আরো ৫টি হাসপাতালকে ডেঙ্গু বিশেষায়িত করা হয়েছে।

আমিনবাজার ২০ শয্যা হাসপাতালে এখনো ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রাখার মত অবকাঠামোগত সুযোগ তৈরী হয়নি। প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত চিকিৎসক ও নার্স মিলে মোট ১৪ জন সেবাদানকারী এখানে সেবা দিচ্ছেন। কোনো রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হলে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সায়েমুল হূদা।

সাভারের আমিনবাজার, বড়দেশী, বেগুনবাড়ি, কাউন্দিয়াসহ আশপাশের কয়েক লক্ষ লোক এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। এমনকি গাবতলীর পাশে হওয়ায় অনেকে ঢাকা সিটি থেকেও এখানে চলে আসেন চিকিৎসেবার আশায়। এই ডেঙ্গু বিশেশায়িত চিকিৎসা কেন্দ্রের সহায়তায় রয়েছেন ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন এবং তত্ত্বাবধায়ন করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close