আশুলিয়াস্থানীয় সংবাদ
আশুলিয়ায় অনলাইন খেলার ৩ জুয়ারি গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিবেদক: আশুলিয়া এলাকা হতে কোপা আমেরিকা ও ইউরো কাপ’কে ঘিরে তিন অনলাইন জুয়ারিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪। তাদের আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে মিরপুর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-৪। এরআগে শনিবার রাতে ( ১০ জুলাই) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি দল আশুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অনলাইনে জুয়া খেলার অপরাধে মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন নথিপত্রসহ ৩ সদস্য’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- কুমিল্লা জেলার মোঃ কামাল হোসেন (৩৩), নড়াইল জেলার মোঃ টুটুল মোল্লা (৩২) ওচাঁদপুর জেলার মোঃ মিজানুর রহমান (৩৩)
র্যাব জানায়, আসামীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অনলাইন জুয়ার সাইটে ইউজার আইডি খুলে বেটিং সাইটের এজেন্টের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ডলার ও ক্রিকারেন্সি ক্রয় করে এবং ওই বেটিং সাইটে ডিপোজিট করে দীর্ঘদিন যাবৎ জুয়া খেলে আসছে। তারা অনলাইন জুয়া খেলার ওয়েবসাইট betbuzz.com, 9wickets.live এবং bajilive এর bankok app এ প্রদর্শিত খেলাধুলার বাজি পরিচালনা করে এবং পলাতক আসামীদের সহযোগীতায় বাজির টাকা ডলারে কিংবা ডলার টাকায় রুপান্তরিত করে ড়হষরহব জুয়া খেলা পরিচালনা করে আসছিলো। গ্রেফতারকৃত আসামীরা নিজ বিকাশ নম্বরে টাকার লেনদেন করে থাকতো।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো জানায় যে উক্ত ওয়েব সাইটে তাদের নিজস্ব এ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং এই এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তারা অনলাইনে জুয়ার বাজি ধরার টাকা পলাতক আসামীদের সহযোগীতায় ডলারের মাধ্যমে লেনদেন ও স্থানান্তর করে থাকে। ধৃত আসামীসহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা অনলাইন ভিত্তিক এসব ওয়েব সাইটের মাধ্যমে জুয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করে তরুণদের বিভ্রান্তির মাধ্যমে দেশের আর্থিক ক্ষতি করে আসছে। এছাড়াও এই অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে তারা বাংলাদেশের টাকা বিদেশে পাচার করে আসছিলো। প্রতিদিন বিকাশ এজেন্ট নাম্বারে তিন লক্ষ টাকা থেকে চার লক্ষ টাকা লেনদেন হত। তারা বাংলাদেশ সরকার অনুমোদনহীন ও অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে অনলাইন জুয়ার সাইট ব্যবহার করে বিভিন্ন জুয়াড়িদের সঙ্গে অনলাইনে জুয়া খেলত।
আসামী কামাল হোসেনের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, সে পেশায় একজন বিকাশ এজেন্ট। তার মোবাইলে bajilive এর bankok app ডাউনলোড করায় তার নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বর সকলের কাছে চলে যেত। যারা বাজি ধরত তারা বিদেশে টাকা পাঠাতো। যারা বাজিতে জিতে তাদের নম্বর ও টাকার পরিমান কামালের মোবাইলে চলে যায়। তখন তাদের টাকা কামাল বিকাশের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মোবাইল নম্বরে পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে তার এই এ্যাপসে প্রতিদিন ৩-৪ লক্ষ টাকা আসে। বাজিতে ৫০০-৩০০০ টাকা ধরা হয়। এখানে বাজিকরদের উপস্থিত হতে হয়না। এটি অনলাইনে খেলা হয়। যারা জিতে তাদের টাকা বিকাশে পাঠানো হয়। বিকাশের এজেন্ট এই কামাল প্রতি লক্ষে ৪০০ টাকা কমিশন পেত এবং বাকি টাকা এই চক্রের মূলহোতা পলাতক সারোয়ার এবং তার সহযোগী মিরাজ’কে হাতে হাতে দিতো।
আসামী টুটুল মোল্লার বরাত দিয়ে র্যাব আরও জানায়, সে পেশায় একজন মুদির দোকানদার। সে প্রায় ০৬ মাস পূর্বে তার মোবাইলে 9wickets.live এ্যাপস্ ডাউনলোড করে বিভিন্ন খেলায় বাজি ধরা শুরু করে। তার এই এ্যাপসে আরো ৩-৪ জন সহযোগী নিয়ে বাজি খেলতো। সে এ পর্যন্ত প্রায় লক্ষাধিক টাকার বাজি খেলেছে বলে স্বীকার করেছে। তার এ সহযোগীদের মধ্যে কেউ বাজিতে জিতলে তাদের টাকা সে পরিশোধ করত এবং তার একাউন্টে টাকা জমা থাকত।
আসামী মোঃ মিজানুর রহমানের ভূমিকা ছিলো, সে পেশায় একজন ফলের দোকানদার। প্রায় ০১ বছর পূর্বে সে তার মোবাইলে betbuzz.com & 9wickets.live এ্যাপস ডাউনলোড করে বিভিন্ন খেলায় বাজি ধরা শুরু করে। সে নিজে বাজি খেলার পাশাপাশি অন্যান্য সহযোগীদের’কে নিয়ে এ বাজি খেলায় উদ্ধুদ্ধ করত। তার এই এ্যাপসে ১০-৫০০ টাকা পর্যন্ত বাজি ধরা যায়। মিজানুরই মূলত আশুলিয়া থানাধীন জামগড়া এলাকায় এই বাজি খেলা উঠতি বয়সী তরুণ ও যুবকদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছে। সে এ পর্যন্ত প্রায় লক্ষাধিক টাকার বাজি খেলেছে বলে স্বীকার করেছে। তার এ সহযোগীদের মধ্যে কেউ বাজিতে জিতলে তাদের টাকা সে পরিশোধ করত এবং তার একাউন্টে টাকা জমা থাকত। যেহেতু সে ও তার সহযোগীরা বিদেশী এ্যাপস্ এ বাজি ধরত, তারা হেরে গেলে সে টাকা এ্যাপস্ এর মাধ্যমে বিদেশে পাচার হতো। এভাবে তারা দেশের বিপুল পরিমান অর্থ পাচার করে আসছিল।
তাদের বিরুদ্ধে র্যাব বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।