আশুলিয়াস্থানীয় সংবাদ
আশুলিয়ার ছাত্রদল থেকে এখন শ্রমিক লীগে মাহফুজ আহমেদ সুমন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির ছাত্রদল থেকে সরাসরি আওয়ামীলীগের অন্যতম অঙ্গসংগঠন শ্রমিকলীগে। আশুলিয়া ইউনিয়নে সহজেই এ যাত্রা সমাপ্ত করার স্বপ্ন দেখছেন এক রাজনৈতিক নেতা। তবে যদিও তার রাজনীতির মারপ্যাচ বোঝা বড় দায়। আশুলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা ১ নং যুগ্ন আহবায়ক থেকে সরাসরি আশুলিয়া ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী এখন তিনি। এমন অসাধ্যকে সাধন করার চেষ্টা করছেন মোঃ মাহফুজ আহমেদ সুমন। এর আগেও তিনি শ্রমিক লীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন বলে জানা গেছে। তবে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় তাকে বহিষ্কার করে তৎকালীন কমিটি।
এমন যাত্রায় বঞ্চনার শিকার হতে পারেন আওয়ামীলীগ এর নেতাকর্মীরা। সুমনের এমন রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের টার্নিং দেখে হতবাক ইউনিয়নের আওয়ামী সমর্থকরা। তবে যেভাবেই হোক নিজের পদটিকে বাগিয়ে নিতে উঠে পড়ে লাগলেও এই নব্য আওয়ামীলীগারের দাপটে কোণঠাসা আশুলিয়ার তৃণমূলের আওয়ামীঘরানার পক্ষাবলম্বীরা।
আওয়ামী লীগে ‘হাইব্রিড’ ও ‘কাউয়া’ শব্দ দু’টি বহুল পরিচিত এবং প্রচলিত৷ এই দু’টি শব্দের প্রচলন কয়েক বছর ধরে চলে আসছে। মূলত যারা সুযোগ সুবিধার জন্য বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন তাদেরই ওই দুই নামে অভিহিত করা হয়৷ এই নব্য আওয়ামী লীগের কারণে কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে এখন৷ তাদের কর্মকান্ডে নাক কাটা যায় খোদ ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগেরই।
বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনের আগে বা পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বিএনপি ও জামায়াত থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন অনেকে। তাদের অনেককে আবার দল থেকে সমূলে উতখাতও করেছে আওয়ামীলীগ নিজেদের সুনাম অক্ষুন্ন রাখার জন্য। হাইব্রীড নেতাদের তালিকাও করার কথা শোনা গিয়েছিল দলের উচ্চ পর্যায় থেকে। তবুও কিছু ছিটেফোটা এখনো বাকি আছে তা আশুলিয়ার দিকে তাকালেই বোঝা যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক লীগ নেতা বলেন, কিছু লোক আছেন যারা তাদের ব্যবসা বাণিজ্য ও নানা সুবিধা টিকিয়ে রাখতে চান৷ তাদের কোনো আদর্শ নেই৷ এরা বঙ্গবন্ধু বা আওয়ামী লীগের আদর্শে বিশ্বাসী নন৷ তারা সুবিধা নেয়ার জন্যই আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন৷ তারা আওয়ামী লীগের দুর্নামেরও কারণ হচ্ছেন৷ বিভিন্নজন তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে তাদের দলে ঢোকার সুযোগ করে দিচ্ছেন৷ ফলশ্রুতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন ত্যাগী নেতা-কর্মীরা ৷
শ্রমিকলীগ, আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক লায়ন মোহাম্মদ ইমাম বলেন, আমাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে কিছু সুযোগ সন্ধানী ঢুকে পড়েছে৷ তাদের আমরা চিহ্নিত করছি৷ আওয়ামী লীগ একটি বড় দল৷ আমরাতো দরজা বন্ধ করে রাখাতে পারিনা৷ যারা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে অনৈতিক ও অবৈধ সুযোগ সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করছেন তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবেনা৷ আর সামনে কমিটি গঠনের সময় তারা দলের কোনো পর্যায়ের কমিটিতে যাতে ঢুকতে না পারে সেজন্য সতর্ক করে দেয়া হয়েছে৷
তিনি আরও বলেন, মাহফুজ আহমেদ সুমন বিএনপির সাথে জড়িত এমন তথ্য গোপন করে আশুলিয়া ইউনিয়নের আহবায়ক কমিতে স্থান নেয়। পরে বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্র দলের ইউনিয়ন পদে ছিলেন এমন তথ্য প্রমান পাওয়ায় তাকে তৎক্ষনাৎ বহিষ্কার করা হয়।
এ ব্যাপারে কমিটি বিহীন নামধারী শ্রমিক লীগের আশুলিয়া কমিটির সভাপতি প্রার্থী আতিক বলেন, কি হয়েছে ওর ব্যাপারে? সে বিএনপির সাথে জড়িত দেখেন নাইতো, নাকি? আমি পুরোপুরি জানি না। আগে আকবর হোসেন মৃধা তাকে কমিটি দিয়েছিল। এখন আমার সাথে আমাদের সাথে আছে।
আশুলিয়া থানা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শাহিন সরকারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায় নি।
এ ব্যাপারে মাহফুজ আহমেদ সুমনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে পরে কথা বলবো। এর আগে ছাত্রদলে থাকার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি মোটরসাইকেলে আছি। নেমে আপনাকে ফোন দিচ্ছি। এরপরে আর তার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি।
/আরএম