দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
জাবির সেই বিতর্কিত প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বহুল বিতর্কিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিনকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজের সই করা এক অফিস আদেশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সুদীপ্ত শাহিনের যত অপকর্মঃ সুদীপ্ত শাহিনের বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকাটি বেশ দীর্ঘ। গত এপ্রিলে মাহবুব আলম নামের রসায়ন বিভাগের এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় গত ২ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ওই শিক্ষক। এর আগে গত বছরের ২ ডিসেম্বর এক সহকারী অধ্যাপকসহ সাবেক দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২৫তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী আকবর আলী বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এ ছাড়া গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদ উপস্থাপিকাকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ ওঠে সুদীপ্তর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ওই সংবাদপাঠিকা।
গত ১৮ নভেম্বর অনলাইনে অনুষ্ঠিত বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় তিনটি অভিযোগের ঘটনায় গঠিত প্রাথমিক তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে তাকে এ শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারি দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের ১০ ক.(২) ধারা অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালে তিনি জীবিকানির্বাহ ভাতা পাবেন।
দীর্ঘ দিন থেকেই বিতর্কিত নানা কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি আলোচিত ও গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছিলেন। তার নানা অপকর্ম নিয়ে ৩০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাঁর অপকর্মের তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছিল।
ক্যাম্পাসে মাদকের কারবার ও ছিনতাইয়ে সহযোগীতা, মাদক সেবন, দর্শনার্থীদের মারধর, যৌন হয়রানি, ভ্যান ও রিকশাচালকদের মারধর, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাবেক শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত করা, মাদক দিয়ে নিরীহ লোকজনকে ফাঁসিয়ে দেওয়া, নারী সংবাদকর্মীকে উত্ত্যক্ত করা, শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হয়রানি- এমন নানা অভিযোগ রয়েছে সুদীপ্ত শাহিনের বিরুদ্ধে। এর পরও এসব ঘটনার কোনোটিতেই তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আগের একটি ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলেও তা সিন্ডিকেটে তোলা হয়নি।
সর্বশেষ গত ১৬ অক্টোবর ক্যাম্পাসে পিটিয়ে নাহিদ নামের এক ভ্যানচালকের পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। পেশায় চায়ের দোকানি হলেও দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় জীবিকার তাগিদে ভ্যানে পণ্য পরিবহন করে থাকেন নাহিদ। ওই দিন বন্ধ ক্যাম্পাসে পণ্য পরিবহনের জন্য ভ্যান নিয়ে প্রবেশ করেন তিনি। সন্ধ্যায় পণ্য পরিবহন শেষে বাসায় ফেরার পথে এক নারীর অনুরোধে তাঁকে ভ্যানে করে বাসায় পৌঁছে দিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগের সময় নাহিদকে আটক করেন সুদীপ্ত শাহিন। পরে নিরাপত্তা শাখার অফিসকক্ষে নিয়ে পিটিয়ে তাঁর পা ভেঙে দেওয়া হয়।
/এন এইচ