আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামবিশেষ প্রতিবেদনসাভারস্থানীয় সংবাদ
জাহাঙ্গীরনগর থেকে গাবতলী এবং আশুলিয়া ভায়া নারায়ণগঞ্জ রুটে হচ্ছে পাতাল ট্রেন
রিফাত মেহেদী, বিশেষ প্রতিনিধিঃ যানজট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবার মাটির নিচ দিয়ে রেল চলাচলের বিশাল পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঢাকার মোট ১১টি রুটকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে এর মধ্যে সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় দুইটি রুটের সাথে সংযুক্ত থাকবে। এভাবেই সমীক্ষা চালিয়েছে পরামর্শক কমিটি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গাবতলীঃ (রুট ‘ডব্লিউ’)
১৫.৫২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই রুটে ছয়টি স্টেশন থাকবে। রুটগুলো হচ্ছে- গাবতলী, এসটি০২, এসটি০৩, এসটি০৪, এসটি০৫, এসটি০৬, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও এসটি০৮। প্রসঙ্গত, ‘এসটি’ তথা স্টেশন লেখা গন্তব্যে এখনো স্টেশন চূড়ান্ত হয়নি। তাই এসটি লিখে রাখা হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নারায়ণগঞ্জঃ (রুট ‘টি’)
এটি পাতাল রেলের সবচেয়ে বড় রুট হিসেবে পরিকল্পিত হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত ৪৭.৫৪ কিলোমিটার পথে ৪৪টি স্টেশন থাকবে। রুটগুলো হচ্ছে- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, আদর্শনগর, কলমা, আউকপাড়া, আশুলিয়া মডেল টাউন ওয়েস্ট, আশুলিয়া মডেল টাউন সেন্ট্রাল, আশুলিয়া মডেল টাউন ইস্ট, বিনোদপুর, উত্তরা সেক্টর-১৬, উত্তরা নর্থ, উত্তরা সেক্টর-১২, উত্তরা সেক্টর-১৩, আযমপুর রোড, আযমপুর কাঁচাবাজার, শাহকবির মাজার রোড, নোয়াপাড়া (দক্ষিণখান), নদ্দাপাড়া (দক্ষিণখান), বরুয়া নর্থ, বরুয়া সাউথ, পিওএইচএস, বসুন্ধরা ব্লক কে অ্যান্ড এল, বসুন্ধরা সাউথ, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, মেরুল ব্রিজ, সানভ্যালি নর্থ, আফতাবনগর নর্থ, আফতাবনগর ইস্ট, ওয়েস্ট নন্দীপাড়া, গ্রিন মডেল টাউন, মাতুয়াইল উত্তরবন্দ, মাতুয়াইল উত্তরপাড়া, শনিরআখড়া, রায়েরবাগ, ইস্ট মোহাম্মদবাগ, আদর্শনগর, শিবু মার্কেট, ডিসি অফিস নিউ কোর্ট ও চাষাঢ়া।
এই ২টি রুট ছাড়াও ঢাকা শহরকে কেন্দ্র করে আরও ৯টি রুটে পাতাল রেলের পরিকল্পনা করা হয়েছে। মেট্রোরেল এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ের পাশাপাশি এবার সাবওয়ে নির্মাণের পথ উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে ঢাকা গণপরিবহন কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের দিক থেকে সাবওয়ে প্রকল্পট বাস্তবায়নের অর্থায়ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
১৪ নভেম্বর তৃতীয় বাংলাদেশ-কোরিয়া যৌথ পিপিপি বৈঠকে টঙ্গী থেকে সদরঘাট রুটের প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে সেতু কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশের পিপিপি কর্তৃপক্ষ ও কোরিয়া ইনফ্রাস্ট্রাকচার এন্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (কেআইএনডি) ভার্চুয়াল বৈঠকটি আয়োজন করেছে।
সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, ঢাকা শহরে বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ। প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রায় ৭ হাজার ৯৫০ জন। মোট সড়কের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ২৮৬ কিলোমিটার। সড়কের ঘনত্ব ৯ দশমিক ০১ শতাংশ। অথচ আদর্শমান হচ্ছে ২০-২৫ শতাংশ সড়কের ঘনত্ব। ফাঁকা জায়গা ৩ দশমিক ০৯ শতাংশ, থাকা প্রয়োজন ১৫-২০ শতাংশ। সড়কের বর্তমান সক্ষমতা ৩ লাখ হলেও বিআরটিএর নিবন্ধিত গাড়ির সংখ্যা প্রায় ৯ লাখ। ঢাকা শহরে যানজটের কারণে প্রতিবছর প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য সেতু বিভাগ ঢাকা শহরে সাবওয়ে (আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো) নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সড়কপথে যেখানে ১০০ বাসে ঘণ্টায় ১০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারে, সেখানে সাবওয়েতে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল সম্ভব।
/আরএম