দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
এএসপি হত্যাঃ দুই জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম শিপন হত্যা মামলায় গ্রেফতার মাইন্ড এইড হাসপাতালের দুইজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন-হাসপাতালের কিচেন সেফ মাসুদ খান এবং ওয়ার্ড বয় অসীম চন্দ্র পাল।
রোববার রিমান্ড চলাকালে তারা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তাদের আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ফারুক মোল্লা। এ সময় তদন্ত কর্মকর্তা তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন।
মঙ্গলবার হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়সহ ১০ জনের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদ-উর-রহমান তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তারা হলেন- হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন শেফ মো. মাসুদ, ওয়ার্ডবয় জোবায়ের হোসেন, ফার্মাসিস্ট মো. তানভীর হাসান, ওয়ার্ডবয় মো. তানিম মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, মো. লিটন আহাম্মদ ও মো. সাইফুল ইসলাম পলাশ।
এএসপি শিপনকে মারধরের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গত সোমবার দুপুর পৌনে ১২টায় মানসিক সমস্যার কারণে হাসপাতালে আসেন এএসপি আনিসুল করিম। অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই মারা যান তিনি। হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন মাধ্যমে।
দীর্ঘক্ষণ অচেতন থাকা অবস্থায়ও তাকে ভর্তি কার্যক্রম করা হয়নি। কিছুক্ষণ পর ১২টার দিকে তাকে হাসপাতালের লোকজন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে নেয়ার আগেই মৃত্যু (ব্রট ডেথ) হয় শিপনের।
এ ঘটনায় আদাবর থানায় হত্যা একটি মামলা করা হয়। মঙ্গলবার আনিসুল করিম শিপনের বাবা বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে এ মামলা করেন। মামলা নম্বর ৯।
হাসপাতালটির সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সকালে আনিসুল করিম শিপন হাসপাতালে ঢোকার পরই ৬-৭ জন তাকে টানাহেঁচড়া করে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। এ সময় মাথার দিকে থাকা দুজন হাতের কনুই দিয়ে তাকে আঘাত করছিলেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে শিপনের হাত পেছনে বাঁধা হয়। ৪ মিনিট পর তাকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়েন শিপন।
আনিসুল করিম শিপন ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। সর্বশেষ তিনি বরিশাল মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের জনক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
/এন এইচ