বিশ্বজুড়ে
লাদাখে চীন-ভারতের যুদ্ধের প্রস্তুতি
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: কোনভাবেই চীন-ভারতের মধ্যকার উত্তেজনা থামানো যাচ্ছে না। লাদাখের প্যাংগং লেকের ফিঙ্গার পয়েন্ট এবং দেপসাং উপত্যকা থেকে সেনা সরাতে রাজি নয় চীন। লাদাখ সীমান্তে চী্ন এবং ভারত দুই পক্ষই সেই রকম প্রস্তুতি নিয়েছে। স্যাটেলাইট ইমেজে স্পষ্ট, লাদাখ সীমান্তে বিপুল কাঠামো তৈরি করেছে চীন। শীতের কথা মাথায় রেখেই এগুলি তৈরি করা হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দুই পারে দুই পক্ষই যুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে তৈরি হয়ে আছে। চীন এলএসির খুব কাছে অন্তত ১৫০ যুদ্ধবিমান মজুত করেছে। এর মধ্যে ফাইটার, হেলিকপ্টার, ইলেকট্রনিক ওয়ার্নিং অ্যাসেট রয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী সূত্রে জানা যায়, এই মুহূর্তে লাদাখের বিভিন্ন সীমান্তে ৫০ হাজারেরও বেশি ভারতীয় সেনা রয়েছে। সমসংখ্যক সেনা আছে চীনের প্রান্তেও। তবে এরই মধ্যে প্যাংগং লেকের উত্তর অংশে ফিঙ্গার পয়েন্ট চারে একটি পাহাড়ে নিজেদের আধিপত্য তৈরি করতে পেরেছে ভারতীয় সেনা। যেখান থেকে ফিঙ্গার পয়েন্ট চারের অন্য দিকে চীনা সেনার চলাফেরা দেখা সম্ভব।
গত দুই দিনে লাদাখে ভারত এবং চীনের সেনার মধ্যে বড় কোনও সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটলেও প্রায় প্রতিদিনই দুই পক্ষের মধ্যে ছোটখাটো সংঘাত হচ্ছে। সীমান্তের দুই পার থেকেই শূন্যে গুলি ছোড়া হচ্ছে। তবে হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। বস্তুত, দুই পক্ষই যুদ্ধের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা জানান, চীন এলএসির খুব কাছে অন্তত ১৫০ যুদ্ধবিমান মজুত করেছে। এর মধ্যে ফাইটার, হেলিকপ্টার, ইলেকট্রনিক ওয়ার্নিং অ্যাসেট রয়েছে। এ ছাড়াও ট্যাঙ্কার এবং সারফেস টু এয়ার মিসাইল রয়েছে। ভারতীয় সেনার দাবি, তারাও সম পরিমাণ বিমান এবং যুদ্ধাস্ত্র লাদাখ সীমান্তে রেখেছে। বস্তুত, লে বিমানবন্দরে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধবিমান রাখা হয়েছে। লে থেকে প্রতিদিন হেলিকপ্টার সীমান্তে টহল দিচ্ছে। এক প্রাক্তন বায়ুসেনা কর্তা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, লে থেকে একটি ফাইটারের চীন সীমান্তে পৌঁছতে সময় লাগবে মাত্র আট মিনিট। ১৬ মিনিটের মধ্যে ফাইটারটি আবার লে বিমান বন্দরে ফিরে আসতে পারে। এ ছাড়াও ভারতের হাতে এখন পাঁচটি রাফাল যুদ্ধবিমান আছে। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে যা বিমানবাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। ফরাসি মন্ত্রীও সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছেন। রাফাল কী কী করতে পারে, তার মহড়া আজ দেখানো হবে আম্বালার বায়ুসেনা ঘাঁটিতে। আরও বেশ কয়েকটি রাফাল কিছু দিনের মধ্যেই পৌঁছে যাবে ভারতে।
লাদাখের স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, সীমান্তে এখনও তীব্র উত্তেজনা রয়েছে। যে কোনও সময় বড় কিছু ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে প্যাংগংয়ের দক্ষিণ প্রান্তে পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। চীন এবং ভারতের সেনা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে। এরই মধ্যে প্যাংগংয়ের উত্তর প্রান্তে ফিঙ্গার পয়েন্ট চারে নতুন একটি উচ্চতার দখল নিয়েছে ভারতীয় সেনা। সেখান থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার অন্যদিকে চীনের সেনার কার্যকলাপ দেখতে পাওয়া যায়। সেপ্টেম্বর মাসের একটি স্যাটেলাইট চিত্রও সেনার হাতে এসেছে। যাতে দেখা যাচ্ছে ফের প্যাংগংয়ের ধারে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিপুল পরিমাণ কাঠামো তৈরি করেছে চীনের সেনা।
শুধু লাদাখ নয়, সিকিম এং অরুণাচলেও সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করে রেখেছে ভারতীয় সেনা। এছাড়াও উত্তরাখণ্ডে নেপাল-ভারত-চীন সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করে রাখা হয়েছে। সূত্র: ডয়চে ভেলে
/একে