আমদানি-রপ্তানীপ্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্য
করোনাকালে চাল রফতানি কমলেও আয় বেড়েছে ভিয়েতনামের
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বিশ্বে চাল উৎপাদনকারী দেশগুলোর শীর্ষ তালিকায় ভিয়েতনামের অবস্থান পঞ্চম। তবে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশ এটি। তাই আন্তর্জাতিক বাজারে চালের মূল্য নির্ধারণে দেশটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। তবে করোনা মহামারির কারণে ভিয়েতনামের চাল রফতানিতে কিছুটা মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে (জানুয়ারি-আগস্ট) দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চাল রফতানি প্রায় ২ শতাংশ কমেছে।
রফতানির পরিমাণ কমলেও চলতি বছরের প্রথম আট মাসে চাল রফতানি বাবদ ভিয়েতনামের রফতানিকারকদের আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। মাসভিত্তিক সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রায়ত্ত জেনারেল স্ট্যাটিস্টিকস অফিস।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ভিয়েতনাম থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সবমিলিয়ে চাল রফতানি হয়েছে ৪৫ লাখ টন, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ কম। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুলাই সময়ে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৩৯ লাখ টন চাল রফতানি হয়েছিল, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ কম।
রফতানির পরিমাণ কমলেও চলতি বছরের জানুয়ারি-আগস্ট সময়ে চাল রফতানি করে ভিয়েতনামিজ রফতানিকারকদের আয় বাড়তির দিকে ছিল। এ সময় চাল রফতানি বাবদ সব মিলিয়ে ২২০ কোটি ডলার আয় করেছে দেশটি। এক বছরের ব্যবধানে চাল রফতানি বাবদ দেশটির আয় ১০ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। বছরের প্রথম সাত মাসে চাল রফতানি করে দেশটি সব মিলিয়ে ১৯১ কোটি ডলার আয় করে।
দেশটির জেনারেল স্ট্যাটিস্টিকস অফিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাসভিত্তিক হিসাবে সর্বশেষ আগস্টে ভিয়েতনাম থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে পাঁচ লাখ টন চাল রফতানি হয়েছে। এ সময় চাল রফতানি করে দেশটির সম্মিলিত আয় ২৫ কোটি ১০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে। জুলাইয়ে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে তিন লাখ টন চাল রফতানি হয়েছিল, আর আয় হয়েছিল ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
চীনের উহান থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভিয়েতনামেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। তবে খুব কম সময়ের মধ্যে করোনা নিয়ন্ত্রণে আনে দেশটি। কিন্তু করোনার কারণে অভ্যন্তরীণ খাদ্যশৃঙ্খল রক্ষা ও জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে চাল রফতানি সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। সহজ ও স্বল্পমূল্যে জনগণের হাতের কাছে চাল পৌঁছে দিতে দেশটির বিভিন্ন শহরে চালের বুথ চালু করা হয়। তবে জুলাই-আগস্টে এসে নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় দেশটির চাল রফতানি খাত সঙ্কটে পড়েছে।
ভিয়েতনামের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মাই থিয়েন দায়াং জানান, মহামারির কারণে মার্চে ভিয়েতনাম থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে চাল রফতানি বন্ধ ছিল। এপ্রিলে চাল রফতানিতে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টনের সীমা বেধে দেয়া হয়। অভ্যন্তরীণ খাদ্যশৃঙ্খল রক্ষা ও জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে সাময়িকভাবে এসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। মে থেকে চাল রফতানি স্বাভাবিক হয়ে এলেও তা আগের বছরের একই সময়ের পর্যায়ে উন্নীত করা সম্ভব হয়নি।
/এন এইচ