দেশজুড়ে

পূর্বাচলে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন বঙ্গবন্ধু চত্বর

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ রাজধানীর পূর্বাচলে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন বঙ্গবন্ধু চত্বর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে একসঙ্গে নির্মাণ করা হবে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী স্মারক সৌধ। চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে বা ২০২১ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করা হবে। স্থাপত্য অধিদফতর একটি খসড়া নক্সা প্রণয়ন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে এই নকশা চূড়ান্ত হবে।

প্রাথমিকভাবে বঙ্গবন্ধু চত্বর নির্মাণে পূর্বাচলের তিনটি স্থান নির্বাচন করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউক। এর মধ্যে যে কোন একটি স্থান চত্বর নির্মাণের জন্য বেছে নেয়া হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর তিন সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী স্মারক সৌধ স্থাপনের কাজ বাস্তবায়নের জন্য গণপূর্ত অধিদফতর এবং রাজউকের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ১১ সদস্যবিশিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এটি হবে দেশের একটি অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র।

সূত্র জানায়, পূর্বাচলে বিশেষভাবে তৈরি চত্বরটিতে থাকবে সুন্দর ও মনোরম পানির ফোয়ারা। থাকবে দৃষ্টিনন্দন আলোর ব্যবস্থা। রাতের আঁধারে রং বেরংয়ের আলোর বিচ্ছুরণ অনেক দূর থেকে দেখা যাবে। স্মারক সৌধের সামনে থাকবে বসার ব্যবস্থা। পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এ স্থানে এসে সময় কাটাতে পারবেন সৌন্দর্যপিপাসু মানুষ। নাগরিকদের রাতে আড্ডা দেয়ার জন্য থাকবে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বঙ্গবন্ধুর স্মারক সৌধে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে শুরু করে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ইতিহাস তুলে ধরা হবে। এতে ১৯৬৬ সালের ৬ দফা দাবি, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুথান, ১৯৭০ এর নির্বাচন ও ১৯৭২ সালের ৭ মার্চের ভাষণ ও মুক্তিযুদ্ধের বর্ণনা তুলে ধরা হবে। স্মারক সৌধে বঙ্গবন্ধুর এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম শীর্ষক ভাষণের বঙ্গবন্ধুর হাতের আঙ্গুল প্রদর্শিত থাকবে। তিনটি নির্বাচিত স্থানের মধ্যে একটি হচ্ছে ১৫ নং সেক্টরে। এর তিন পাশেই রয়েছে লেক তথা পানি। এই স্থানটি নির্বাচনের সম্ভাবনা অনেক বেশি বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এ চত্বরটি নির্মাণের জন্য ৫ নং সেক্টরের ১০৩নং সড়কটি পছন্দ করেছেন। এটি কাঞ্চন ব্রিজসংলগ্ন। যুক্তি হিসেবে তিনি দাবি করেন, দেশের মোট ২২টি জেলার সম্মিলন স্থল হচ্ছে এই এলাকা। এ স্থান দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার বাস ট্রাকসহ নানা ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এ স্থানে নির্মাণ করা হলে চত্বরটির সৌন্দর্য দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে ও আসল উদ্দেশ্য পূরণ করা সম্ভব হবে। এর আগে সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমও সরেজমিনে পরিদর্শন করে একই স্থানে বঙ্গবন্ধু চত্বর নির্মাণের পক্ষে মত দেন। পরবর্তীতে বর্তমান গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণের পর পুনরায় স্থান পরিদর্শন করেন। পরে সার্বিক দিক ও সৌর্ন্দয্যময় স্থান হিসেবে পূর্বাচলের মধ্যবর্তী এলাকায় এ চত্বরটি নির্মাণের পক্ষে রায় দেন। একইসঙ্গে স্থাপত্য নক্সা চূড়ান্ত করার জন্য স্থাপত্য অধিদফতরকে নির্দেশনা প্রদান করেন।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু চত্বর নির্মাণের নির্ধারিত স্থান কাঞ্চন ব্রিজ সংলগ্ন সড়ক চত্বরের অধিকাংশ জমি সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের আওতাভুক্ত ঢাকা-কালীগঞ্জ বাইপাস রোডে পড়েছে। ফলে জমি অধিগ্রহণসহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। তাই বিকল্প স্থান হিসেবে ১৫ নং সেক্টরের ২০৩ নং সড়কের ১৭ নং প্লটকেই বেছে নেয়া হয়। একইসঙ্গে ল্যান্ড ইউজ প্লানে প্রদর্শিত পার্ক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। নতুন এ স্থানটির জমির পরিমাণ ২ দশমিক ৩১৯ একর।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close