দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

যুব সমাজকে চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ যুব সমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যে তাদের সহযোগিতা ও উৎসাহিত করার আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি যুবকদের চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শও দেন প্রধানমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এর গভর্নিং বডির সপ্তম সভার সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব পরামর্শ দেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সভায় সংযুক্ত ছিলেন তিনি।

যুব সমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যুব সমাজকে যেন আকৃষ্ট করতে পারি, তাদের উৎসাহিত করতে পারি। শুধু চাকরির পেছনে ছোটা না, নিজেরা কিছু করে দেখানো, কাজ করা। সেই দিকে আমাদের দৃষ্টি দিয়ে কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা। এখন অনেক বিনিয়োগ। এটা সব সময় এদেশ থেকে ওদেশে ঘুরতে থাকে। আমরা যত বেশি আনতে পারি আমাদের জন্য ভালো। কাজেই বিদেশি বিনিয়োগ যেমন আসবে, দেশেও আমাদের যাদের বিনিয়োগ করার সক্ষমতা আছে তারাও যেন বিনিয়োগ করতে পারে। আমাদের যারা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী তাদেরও আমরা যেন উৎসাহিত করতে পারি।’ এসময় দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এবং কর্মসংস্থান বাড়াতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির তাগিদ দেন তিনি।

দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘শিল্পায়নের ক্ষেত্রে আমাদের দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে হবে। আমাদের শিল্পায়ন করতে হলে জায়গা সুনির্দিষ্ট করে দিতে হবে। খুব দ্রুত একটা কাজ করতে গেলে আমাদের সমস্যা হয়ে যায়, সেটা হচ্ছে ভূমি নিয়ে। এই সমস্যাটা যাতে না থাকে সেটা মাথায় রাখতে হবে। পাশাপাশি ফসলি জমি, কৃষি জমি সেটাও আমাকে রক্ষা করতে হবে। বনভূমি রক্ষা করতে হবে। এই সব কিছু চিন্তাভাবনা করে আমরা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেই।’

কৃষির সঙ্গে শিল্পায়নের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি কৃষি নির্ভর। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে শিল্পায়নও আমাদের প্রয়োজন। শিল্পায়ন বা শিল্পের বিকাশ ছাড়া কোনো দেশ অগ্রগতি অর্জন করতে পারে না। আমরা চাচ্ছি আমাদের দেশে শিল্পায়ন হোক। কারণ শিল্পায়ন ছাড়া আমরা যেমন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবো না। দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করতে হবে। আবার সঙ্গে সঙ্গে রফতানিও বৃদ্ধি করতে হবে। এই সব কথাগুলো মাথায় রেখে আমাদের শিল্পায়নের প্রচেষ্টা।’

শিল্পায়নের বিকাশের সঙ্গে কৃষি জমি ও পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্পায়নের ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে, আমাদের দেশ ভূখণ্ডের দিক থেকে অত্যন্ত ছোট হলেও আমাদের জনসংখ্যা অনেক বড় এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আমাদের যেমন কৃষি জমি রক্ষা করতে হবে, আবার প্রকৃতির সঙ্গে আমরা যেন চলতে পারি। কারণ বাংলাদেশ একটা ডেল্টা। এটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। কাজেই আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করাটাও একান্তভাবে অপরিহার্য। সেদিকেও আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।’

করোনা মহামারির প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে সরকার বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা আমাদের অনেক ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। কিন্তু আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতির ক্ষেত্রটা যেন সম্প্রসারিত হতেই থাকে এবং অগ্রগতি পেতেই থাকে সেটা আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close