আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদ
আশুলিয়ায় শিশু মারিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার লোমহর্ষক তথ্য দিল পুলিশ, যুবক গ্রেফতার (ভিডিও)
নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ ৮ মাস পর ময়না তদন্তসহ বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষার পর আশুলিয়ায় ৬ মাসের শিশু মারিয়া বেগমকে ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। এঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক ও হত্যাকারী শিমুলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খবর পেয়ে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় বন্যায় পানি বন্দী বাবা ও স্বজনরা ছুটে এসেছেন নির্মম ঘটনার বিচারের আশায়।
শনিবার (২৫ জুলাই) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার এস আই সাজ্জাদুর রহমান। এর আগে রাতে আশুলিয়ার গাজীরচটের বুড়িবাজার থেকে শিমুলকে গ্রেফতার করা হয়। সঙ্গে তার শাশুড়ি ও নিহত শিশুটির পরিচর্যাকারী নুরজাহান বেগমকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহত শিশুর বাবা ফারুক প্রামানিক বাদী হয়ে আজ শনিবার (২৫ জুলাই) আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেফতারকৃত শিমুল (২৫) নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের রসুলপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। সে আশুলিয়ার কাইচাবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো। এবং নুরজাহান জামালপুর জেলার আটাবরি এলাকার মৃত মেহের আলীর স্ত্রী। শিমুল সম্পর্কে নুরজাহান বেগমের মেয়ের জামাই। তিনিও আশুলিয়ার গাজীরচটের বুড়িরবাজার এলাকায় ভাড়া থেকে শিশু পরিচর্যা করে জীবিকা নির্বাহ করতো।
শিশুর এমন নির্মম ঘটনার বিচার চাইলেন হতভাগা বাবা। আর এভাবে যেন কোন শিশুকে প্রাণ হারাতে না হয়, সেই দাবীও জানালেন বাবা মো. ফারুক প্রারমানিক।
তবে নিহত শিশুর দাদা মালেক প্রামানিক জানান, বিচার চাইলেও দারিদ্রতার বড় বাঁধা। টাকা পয়সা নেই। পুলিশ টাকা দিয়েছে বলে আমরা আসতে পেরেছি। পরে মামলার প্রয়োজনে আদালতে বা থানায় আসতে হলে সেই উপায় নেই। তাই সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই।
আশুলিয়া থানার এস আই সাজ্জাদুর রহমান জানায়, গত ২৩ ডিসেম্বর আশুলিয়ার বুড়িবাজার এলাকায় পরিচর্যাকারী নরুজাহানের কাছে থাকা অবস্থায় শিশু মারিয়ার রহস্যজনক মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। তখন শিশুর শরীরে ও মলদ্বারে কিছু অস্বাভিবকতা ছিল । পরে নিহত শিশুর ময়না তদন্তসহ বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষা দেয়া হয়। বেশ কয়েকটি পরীক্ষার করানোরপর নিশ্চিত হই শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে ও তাকে হত্যা করা হয়েছে। সেই সূত্র ধরে শিশু পরিচর্যাকারী নুরজাহানের মেয়ের জামাই শিমুলকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া তথ্য গোপন ও অপরাধীকে বাঁচানোর চেষ্টার জন্য শিমুলের শাশুড়ি নরুজাহান বেগমকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে, ওইদিন ঘরে একা পেয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে বখাটে শিমুল। শিশুটির মুখে ধর্ষকের আঙ্গুলের ছাপ ও মলদ্বারে ক্ষত দেখা গেছে। সুরহাতাল করতে গিয়ে হাত কেপে উঠছিল বার বার-এমন নির্মম ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন সাজ্জাদুর রহমান।
এদিকে ঘটনার শিশুরটি বাবা-মা দুইজনই চাকরি তাদের নিজ গ্রাম রাজশাহীতে চলে যায়। পরে আজকে (২৫ জুলাই) তাদের খবর দিয়ে আশুলিয়া থানা আনা হয়। বাবা ফারুক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ ডিসেম্বর আশুলিয়ার বুড়িবাজার এলাকা থেকে পরিচর্যাকারর বাসা থেকে ৬ মাসের শিশুর মারিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মুলত নিহত শিশুর বাবা ফারুক ও মা রেখা দুইজনেই পোশাক কারখানায় চাকরি করতো। তাই দেখাশুনার জন্য প্রতিবেশী নুরজাহান বেগমের কাছে মাসিক ৩ হাজার টাকা চুক্তিতে রেখে যেতেন।
ভিডিও দেখুন: