দেশজুড়ে

‘চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে’ টাকায় কথাটি কেন লেখে?

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ জীবনে প্রয়োজনের তাগিদেই টাকার লেনদেন করা জরুরি হয়ে পড়ে। টাকায় লেখা থাকা ‘চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে’ লেখাটি নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন। তবে কখনো কী ভেবে দেখেছেন, ১ ও ২ টাকা বাদে বাকি সব টাকার নোটে কেন এই কথাটি লেখা থাকে?

এই প্রশ্নের উত্তর জানতে আপনাকে অর্থনীতিবিদ হতে হবে না। তাই চিন্তা ছাড়ুন! আর জেনে নিন এই প্রশ্নের সহজ উত্তর। দেরি না করে চলুন জেনে নেয়া যাক টাকার নোটে এই কথাটি লেখার আসল কারণ- আমরা জানি বাংলাদেশের মুদ্রা ছাপার একমাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক। কথা হলো এই মুদ্রা আসলে কী? মুদ্রা বলতে কী বোঝায় সেই সম্পর্কে সবারই একটু ধারনা রাখা ভালো।

বাংলাদেশের সরকারি মুদ্রা হলো দুটি। ১ ও ২ টাকার নোট কিংবা কয়েন হলো সরকারি মুদ্রা আর বাকিগুলো হলো সমপরিমাণ টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ছাপানো বিল অব এক্সচেঞ্জ। বাংলাদেশ ব্যাংক টাকার বিপরীতে নোট ছাপে। তাই এটা বাংলাদেশের জনগণের কাছে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়।

মনে করুন, আপনি কোনো কারণে ব্যাংক নোটের উপরে আস্থা রাখতে পারছেন না। তাই আপনি ১০০ টাকার একটি নোট বাংলাদেশ ব্যাংক কাউন্টারে জমা দিয়ে বিনিময় চাইলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক চাহিবামাত্র এর বাহককে অর্থাৎ আপনাকে সমপরিমাণ ১ ও ২ টাকা প্রদান করে দায় থেকে মুক্ত হবে। এই হচ্ছে মূল বিষয়।

চলুন বিষয়টি আরেকটু ব্যাখ্যা করা যাক। বাংলাদেশ ব্যাংক যখন কোনো নোট বাজারে ছাড়ে তখনই সমপরিমাণ ১ও ২ টাকার নোট বা কয়েন সরকারি অ্যাকাউন্ট থেকে নিজের অ্যাকাউন্টে নিয়ে নেয়। আবার যখন ১ ও ২ টাকা মার্কেটে ছাড়ে তখনই সমপরিমাণ নোট সরকারি অ্যাকাউন্টে জমা দেয়। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের নিকট থেকে টাকা নিয়ে টাকা ছাড়ে। সে হিসেবে মার্কেটে যত টাকার নোট আছে ঠিক সমপরিমাণ টাকা (১ ও ২) বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত আছে। সুতরাং সব নোট ব্যাংকে জমা করলেও ১ ও ২ টাকার কয়েন/ নোট দিতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

১ ও ২ টাকা হলো টাকা, আর বাকিগুলো বিল অব এক্সচেঞ্জ। আর এজন্য ১ ও ২ টাকার নোটে লেখা থাকে না ‘চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে’। বাকি নোটগুলোয় ঠিকই লেখা থাকে।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close