দেশজুড়েপ্রধান শিরোনামসাক্ষাৎকার

দ্বিতীয়বার প্লাজমা নিয়েছি, উন্নতি হচ্ছেঃ ডা. জাফরুল্লাহ

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। ফুসফুসের এক্স-রেতে তার অবস্থার উন্নতি দেখা যায়। করোনায় আক্রান্তের পর তিনি প্লাজমা নেন। তাতে উপকার পাওয়ায় বৃহস্পতিবার (২৮ মে) রাতে দ্বিতীয়বারের মতো প্লাজমা নেন তিনি। তবে তার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে খুবই স্বল্প খরচে।

তিনি মনে করেন, করোনা চিকিৎসায় সবকিছু মিলিয়ে ১০০ টাকার বেশি খরচ হয় না। স্বপ্নের কথা বলে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘যদি জীবনী শক্তি থাকে, যে সুবিধা আমি পেয়েছি (প্লাজমা গ্রহণসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা), বাংলাদেশের প্রত্যেকটা নাগরিক যেন পায়, তার জন্যে আমি কাজ করতে চাই।’

ডা. জাফরুল্লাহ কী ধরনের ওষুধ-ব্যবস্থা গ্রহণ করে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং করোনায় আক্রান্তরা কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন- এমন নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। শুক্রবার (২৯ মে) দুপুরে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়-।

আপনার বর্তমান শারীরিক অবস্থা কী?

ডা. জাফরুল্লাহঃ ভালো। আমার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।

প্রথম অবস্থায় আপনার হালকা জ্বর ছিল। বর্তমানে কী ধরনের উপসর্গ রয়েছে?

ডা. জাফরুল্লাহঃ এখন জ্বর সামান্য। নাই বললেই চলে। এখন একটা এক্স-রে করালাম হাসপাতালে। তাতে উন্নতি দেখা গেছে। এই রোগ তো শ্বাস-প্রশ্বাসে ঝামেলা করে। এজন্য লাংয়ের ছবি নিলাম, এক্স-রে করালাম। তাতে দেখা গেছে, অবনতি হয় নাই, বরং উন্নতি হয়েছে।

আপনি কী ধরনের ওষুধ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন?

ডা. জাফরুল্লাহঃ অকারণে ওষুধ-টষুধের পেছনে ঘুইরা লাভ নাই। পয়লা তাকে একটা টেস্ট করাতে হবে। যদি টেস্ট পজেটিভ হয়, তখন (প্রাথমিক অবস্থায়) ছোট সিম্পটম (উপসর্গ) থাকে। একটু জ্বর থাকে, সর্দি-কাশি থাকে তাকে ৭০ পয়সার প্যারাসিটামল খেতে হবে। আর গরম পানি খেতে হবে, কোনো ঠাণ্ডা কিছু খাওয়া যাবে না।

আর পরিবারের সবার থেকে আলাদা থাকতে হবে। কোনোক্রমেই পরিবারের সাথে থাকা চলবে না। তাহলে সে পরিবারের সব সদস্যকে আক্রান্ত করে দেবে। এটাই হলো বড় কাজ। তারপর যদি দেখা যায় শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। ডাক্তার যদি দেখেন অক্সিজেন লাগবে, তা দিয়ে দেবে। আর দুটা করে প্রতিদিন ডক্সিসাইক্লিন খাবে ৬ দিন।

আপনি কি এই ব্যবস্থাপত্র গ্রহণ করেছেন?

ডা. জাফরুল্লাহঃ আমি ঠিক এভাবেই গ্রহণ করেছি। আমি আরও একটা কাজ করেছি। আমার যেহেতু বয়স অনেক বেশি, ঢাকা মেডিকেল কলেজের ডা. খান বললেন আপনি প্লাজমা নিয়ে দেখেন। সেটা আপনার এন্টিবডি বাড়াবে। শরীরে শক্তি জোগাবে। উনার কথামত আমি দু-দিন আগে প্লাজমা নিলাম। আবার গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতেও নিয়েছি। ২০০ এমএল প্লাজমা ২ ঘণ্টায় আস্তে আস্তে নিয়েছি। এতে উপকার পাওয়া যায় দেখলাম।

আমার কথা হলো, যদি জীবনী শক্তি থাকে, যে সুবিধা আমি পেয়েছি, বাংলাদেশের প্রত্যেকটা নাগরিক যেন পায়, তার জন্যে আমি কাজ করতে চাই। সেটাই আমি জনগণকে অবহিত করতে চাই। যত দ্রুত টেস্ট করা যাবে, আলাদা থাকা যাবে এবং খুব অল্প দামের ওষুধটা খেতে হবে। তাহলেই কোনো ভাবনা নাই।

আপনি দিনে গরম পানি কতবার খেয়েছেন?

ডা. জাফরুল্লাহঃ আমি সারাদিনই খেয়েছি। আধা ঘণ্টা, এক ঘণ্টা পরে পরেই গরম পানি খেয়েছি। কখনও কখনও মধু খেয়েছি। মধু খেলে গলার খসখসানিটা কমিয়ে দেয়। আরও একটা জিনিস রিকমেন্ড (সুপারিশ) করি- ভিটামিন সি উইথ ডি। এটা গণস্বাস্থ্যে আছে। ওটার বোধহয় দাম ৩ টাকা করে পড়ে। প্রতিদিন ৪টা করে ট্যাবলেট খেলে ওটা মানুষের প্রতিষেধক শক্তি বাড়ায়।

উল্লেখ্য, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী হালকা জ্বর অনুভব করলে গত ২৪ মে তার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিটের মাধ্যমে করোনার নমুনা পরীক্ষা করেন তিনি। সেই পরীক্ষায় তার করোনা পজেটিভ আসে। তবে ওই কিট সরকারের কাছ থেকে এখনও অনুমোদন না পাওয়ায় তিনি বিএসএমএমইউয়ের পিসিআর ল্যাবরেটরিতেও নমুনা পরীক্ষা করান। সেখানেও তার করোনা পজেটিভ এসেছে।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close