দেশজুড়ে

মানিকগঞ্জে করোনায় আক্রান্ত ৬, লকডাউন করা হল জেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, মানিকগঞ্জঃ মানিকগঞ্জ জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬ টা থেকে এটি কার্যকর করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে বলে জানান করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস।

রোববার বিকেল ৩টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভায় উপস্থিত সকলের সর্বসম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হযেছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, তাঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য-সচিব এবং সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ, পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, পৌর মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিমসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।

তিনি আরও বলেন, অতীব জীবন রক্ষাকরণ জরুরী প্রয়োজন ব্যতীত ঘরের বাহির হওয়া যাবে না। তবে, সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত কোন কাজেই ঘরের বাইরে আসা যাবে না। জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়ক বা সড়ক ও নৌপথে অন্য কোন জেলা থেকে এ জেলায় কিংবা এ জেলা থেকে অন্যত্র যাওয়া যাবে না। জেলার অভ্যন্তরে আন্ত:উপজেলায়ও একই ধরণের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

তবে এই লকডাইনের আওতামুক্ত থাকবে-বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট এবং এতদ্বসংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মী; চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত এবং ঔষধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মী, ঔষধ-শিল্প সংশ্লিষ্ট যানবাহন ও কর্মী, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী, খাদ্যদ্রব্য, শিশুখাদ্য, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য এবং পশুখাদ্য পরিবহন কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মী, কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, জ্বালানী ইত্যাদি পণ্য পরিবহনকাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মী, কৃষিজ-পণ্য উৎপাদন, মংস্য ও প্রাণী সম্পদ খাতের উৎপাদন, দুগ্ধপণ্য উৎপাদন, খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনসহ জীবনধারণের মৌলিক পণ্য উৎপাদন ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মী, এই সব পরিষেবাসমূহ সংশ্লিষ্ট রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মী, প্রেস ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার যানবাহন ও কর্মী।

যেসব কারণে মানিকগঞ্জ জেলাকে লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে সেগুরো হচ্ছে- বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারী আকারে বিস্তার লাভ করায় লক্ষ লক্ষ লোক আক্রান্ত হয়েছে ও লক্ষাধিক লোক মৃত্যুবরণ করেছে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এই ভাইরাসের সংক্রমন ঘটেছে। হাঁচি, কাঁশি ও পরস্পর মেলামেশার কারণে এ রোগের বিস্তার ঘটে। এখন পর্যন্ত এ রোগের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী এ রোগের একমাত্র প্রতিষেধক হলো পরস্পর হতে পরস্পরকে নির্দিষ্ট দুরত্বে অবস্থান করা। জনসাধারণের একে অপরের সাথে মেলামেশা নিষিদ্ধ করা ছাড়া সংক্রমন প্রতিরোধ সম্ভব নয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এই ভাইরাসের সংক্রমন ঘটেছে এবং সংক্রামক রোগ (প্রতিরধে, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৬১ নং আইন) এর ১১(১)/(২) ধারার ক্ষমতাবলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সমগ্র বাংলাদেশকে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করেছেন। এছাড়া, মানিকগঞ্জ জেলার আশেপাশের জেলাসমূহে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে সেসকল জেলার লোকজনের বেআইনী অনুপ্রবেশ সংঘঠিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত জেলায় ৬ জন ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close