দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

নান্দনিক সাজে সাজছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতার গৌরবময় ইতিহাসের সঙ্গে মিশে থাকা মুক্তিযুদ্ধের নানা স্মৃতিবহ স্থান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এই প্রকল্পের কাজ। যদিও প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছে ২০১৮ সালে। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমায় প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় মেয়াদ বাড়িয়ে তা আগামী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও তার আশপাশের এলাকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মহাপরিকল্পনায় শিশুপার্ককে স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্পের আওতায় রেখে ‘ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ’ শীর্ষক তৃতীয় পর্যায়ের মহাপরিকল্পনার অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর অংশ হিসেবে নকশাও অনুমোদন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও গণপূর্ত অধিদপ্তরকে কাজটি একসঙ্গে সম্পন্ন করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রকল্পের কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের স্থানে ভাস্কর্য নির্মাণ, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থান ও ইন্দিরা মঞ্চে ভাস্কর্য নির্মাণ। এছাড়া রয়েছে শিশুপার্ককে পুরোপুরি ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ। যুক্ত করা হবে নতুন নতুন রাইড ও জলাশয়। নির্মাণ করা হবে শিশুপার্ক থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার জন্য বিশেষ সংযোগ সড়ক। থাকবে ৫৬০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা ও সড়ক।

এছাড়া পরিকল্পনায় রয়েছে জনসভার জন্য একটি স্থায়ী মঞ্চ নির্মাণ, আধুনিক টয়লেট সুবিধাসহ খাবারের দোকান, মসজিদ, পাম্প হাউজ, শিশুপার্কের টিকিট কাউন্টার, ফুলের দোকান ও ছবির হাট নির্মাণ। শাহবাগ থেকেও দৃশ্যমান হবে পুরো এলাকা। ইতিহাসের নানা উপাদানে সাজাতে ইতিমধ্যে দুটি পর্যায়ে প্রকল্পের বেশ কিছু কাজ শেষ হয়েছে বলেও জানা যায়। আগের পর্যায়ে গ্লাস টাওয়ার, মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল, স্বাধীনতা জাদুঘর, শিখা চিরন্তনসহ বেশ কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম ইত্তেফাককে বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থান ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পুরো প্রকল্পে গণপূর্ত অধিদপ্তরসহ তিনটি প্রতিষ্ঠান উন্নয়নকাজ করছে। এর মধ্যে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অংশের কাজের বিষয়ে দক্ষ প্রকৌশলীরা নিয়োজিত আছেন। আমাদের অগ্রাধিকার প্রকল্পের মতো এটিও একটি। আমরা নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিটি ডিভিশন) শওকত উল্লাহ বলেন, ‘গণপূর্ত অধিদপ্তর ইতিপূর্বে দুই ধাপের কাজ অত্যন্ত সুচারুভাবে শেষ করেছে। এখন তৃতীয় ধাপের কাজ চলছে। কিছু কারিগরি বিষয়ে সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। সেগুলো পেলে আমরা কাজে আরো গতি আনতে পারব। এছাড়া মূল মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে যেসব বাধা (স্থাপনা) আছে, তারও অপসরাণ প্রয়োজন।’ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘শিশুপার্কের কাজ এগিয়ে চলেছে। আধুনিক ও অত্যাধুনিক সব রাইড দিয়ে সাজানো হচ্ছে শিশুপার্ক। তবে নতুন করে বেঁধে দেওয়া সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া নিয়ে কিছুটা সংশয়ে আছি।’

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close