বিশ্বজুড়ে

যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূতকে তলব

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত হামিদ বায়েদিনেজাদকে তলব করা হয়েছে। গত শনিবার ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে দেশটিতে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত রব ম্যাকায়ারকে আটক করা হয়েছিল। এক ঘণ্টার বেশি সময় তাঁকে আটক রাখার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাতেই ইরানের রাষ্ট্রদূতকে ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মুখপাত্র।

ইরানের রাজধানী তেহরানে ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজকে ভুল করে ভূপাতিত করার কথা ইরান স্বীকার করার পরই দেশটির বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, আজ সোমবার বরিস জনসনের মুখপাত্র বলেন, ‘এটি ভিয়েনা চুক্তির লঙ্ঘন, যা অগ্রহণযোগ্য। এর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’ ‘আমরা ইরান সরকারের কাছে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না বলে পূর্ণ নিশ্চয়তা চাই। ’

প্রবল আপত্তি জানাতে আজ আমাদের ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিস তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছে।

ইউক্রেনের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ভূপতিত হওয়ার ঘটনার নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে গতকাল শনিবার ইরানের রাজধানী তেহরানে আয়োজিত এক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পর আটক হন রাষ্ট্রদূত রব।

তেহরানের আমির কবির বিশ্ববিদ্যালয়ে এ প্রজ্বালন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। এ আয়োজনে যোগ দিয়েছিলেন ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত রব। কর্মসূচিটি একপর্যায়ে বিক্ষোভে রূপ নেয়। তখন ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন রাষ্ট্রদূত রব। পরে তাঁকে আটক করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সংগঠনে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়।

৩ জানুয়ারি ইরাকের বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডসের কুদস ফোর্সের প্রধান মেজর জেনারেল কাশেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সোলাইমানি হত্যার বদলা নিতে গত বুধবার ভোরের দিকে মার্কিন সেনারা থাকেন—ইরাকে এমন দুটি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর কয়েক ঘণ্টা পর তেহরানের উপকণ্ঠে ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের যাত্রীবাহী একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। এতে উড়োজাহাজের ১৭৬ আরোহীর সবাই নিহত হন।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে বলে দাবি করে আসছিল কানাডাসহ পশ্চিমা দেশগুলো। প্রথমে এই দাবি অস্বীকার করে তেহরান। তবে পুঙ্খানুপুঙ্খ আন্তর্জাতিক তদন্তের কারণে বাড়তে থাকা চাপের মুখে গত শুক্রবার ইরান স্বীকার করে, তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই বিধ্বস্ত হয় উড়োজাহাজটি। তবে ইচ্ছাকৃত নয়, শত্রুপক্ষের যুদ্ধবিমান ভেবে ভুলে এমনটা হয়েছে। এ জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করা হবে।

ইরানের স্বীকারোক্তির পর দেশটিতে বিক্ষোভ হচ্ছে। উড়োজাহাজ ভূপাতিত করার ঘটনা শুরুতে অস্বীকার করায় বিক্ষোভকারীরা ইরান সরকারকে ‘মিথ্যুক’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছে। একই সঙ্গে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পদত্যাগের দাবি করেন।

#এমএস

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close