দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু আজ
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে শুরু হয়েছে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
ফজর নামাজের পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে শুরু হয়েছে মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ইজতেমা ময়দানে আজ শুক্রবার (১০ই জানুয়ারি) কয়েক লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করবেন।
তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিবাদে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে আলাদাভাবে। এবার কোনো পক্ষেরই পাঁচ দিনের প্রস্তুতিমূলক সমাবেশ ‘জোড়’ ইজতেমা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়নি।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাওলানা জুবায়ের পন্থীরা ইজতেমা পালন করবেন ১০, ১১ ও ১২ই জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রথম পর্বের ইজতেমা।
চার দিন বিরতি দিয়ে সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা পালন করবেন ১৭, ১৮ ও ১৯শে জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে এবারের বিশ্ব ইজতেমার।
ময়দানে দেখা গেছে, মুসল্লিদের ওজু, গোসল, পয়োনিষ্কাশন ও সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য ১৩টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে প্রতিদিন ৩ কোটি ৫৫ লাখ গ্যালন সুপেয় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৯ হাজার টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে। ইজতেমাস্থল ও আশপাশের সার্বিক নিরাপত্তা মনিটরিং করার লক্ষ্যে আটটি কন্ট্রোল রুম, পুলিশের জন্য ১৫টি ও র্যাবের জন্য ১০টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। ইজতেমার ময়দান ও আশপাশের এলাকায় সার্বক্ষণিক বিদ্যুত্ সরবরাহের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ইজতেমাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমে ২০ জন কর্মকর্তাসহ ২৫০ কর্মী দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া, ইজতেমা ময়দানের চারপাশের সব অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। গতকাল টঙ্গীর বিভিন্ন বস্তিগুলোতে মাদক, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসব বিষয় মনিটরিং করার জন্য সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমন্বয়ে ১৪টি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ইজতেমায় পুলিশ, র্যাব, সাদা পোশাকধারী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ ১০ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। মাঠের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চার শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও থাকছে মেটাল ডিটেক্টর, বাইনোকুলার, নাইটভিশন গগল্স, পুলিশ ও র্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স, বোমা ডিসপোজাল ইউনিট, নৌ-টহল, হেলিকপ্টার টহল, মুসল্লিদের খিত্তাওয়ারী মোটরসাইকেল টহল ও বিশেষ নিরাপত্তা যন্ত্র আর্চওয়ে। প্রতিটি খিত্তায় বিশেষ টুপি পরিহিত ও সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য অবস্থান করবেন। ১১টি চেক পোস্ট, হেলিকপ্টার ওঠানামার জন্য ২টি হ্যালিপ্যাড স্থাপন করা হয়েছে। নিরাপত্তাব্যবস্থা মনিটরিংয়ের জন্য একটি প্রধান কন্ট্রোল রুম ও আটটি সাব-কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে।
টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. মাসুদ রানা বলেন, মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, বিভিন্ন ইউনিট, ৫০ জন চিকিত্সক এবং ১৭টি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ, ইবনে সিনা, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, র্যাব, জেলা প্রশাসনসহ ৪৫টি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান তাদের স্টলে বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করবে।
টঙ্গী রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার মো. হালিমুজ্জামান জানান, এবারের বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিদের সুষ্ঠু যাতায়াতের জন্য ১৬টি বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ১০ জানুয়ারি থেকে শুরু করে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা অভিমুখী সব ট্রেন পাঁচ মিনিট পর্যন্ত টঙ্গী স্টেশনে দাঁড়াবে। সাপ্তাহিক বন্ধের সব ট্রেনও ঐ সময়ে চলাচল করবে। এছাড়াও প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন কার হচ্ছে।
রেইনবো ক্রসিং হতে আবদুল্লাহপুর হয়ে ধউর ব্রিজ পর্যন্ত এবং রামপুরা ব্রিজ হতে প্রগতি সরণি পর্যন্ত রাস্তা ও রাস্তার পাশে কোনো যানবাহন পার্কিং করা যাবে না। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের যানবাহনগুলো নিম্নবর্ণিত স্থানে (বিভাগ অনুযায়ী) যথাযথভাবে পার্কিং করবে।
/এএস