দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

হলি আর্টিজানে হামলা মামলার রায় আগামীকাল

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ আগামীকাল বুধবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান আলোচিত হলি আর্টিজানে হামলা মামলার রায় ঘোষণা করবেন।

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা মামলার আট আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম সরোয়ার খান জাকির। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন আদালতের কাছে আসামিদের ন্যায়বিচার আশা করেন।

রায়ের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম সরোয়ার খান জাকির বলেন, ‘বহুল আলোচিত এ মামলা রাষ্ট্রপক্ষ সম্পূর্ণভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। মামলায় ছয় আসামি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় সীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আমরা আশা করছি, সব আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত হবে।’

অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে তা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পারেনি। সাক্ষীদের জেরা ও আসামিদের ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারার জবানবন্দি পর্যালোচনায় করলে দেখা যায় আসামিরা নির্দোষ। আমরা আশা করছি, তারা ন্যায়বিচার পাবে।’

এর আগে গত ১৭ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে বিচারক রায় ঘোষণার জন্য ২৭ নভেম্বর নির্ধারণ করেন। এ পর্যন্ত মোট ১১৩ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এর আগে ৮ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়। একই বছরের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের জিআর শাখায় মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই বছরের ২৬ জুলাই সিএমএম আদালত মামলাটি ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেন। এরপর ৩০ জুলাই মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ ও আসামিদের উপস্থিতির জন্য আদালত এ দিন ধার্য করেন।

অভিযোগপত্রে আসামি ২১ জনের মধ্যে ১৩ জন মারা যাওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। নিহত ১৩ জনের মধ্যে ৮ জন বিভিন্ন অভিযানে এবং পাঁচ জন ঘটনাস্থলে নিহত হয়।

অভিযোগপত্রে আট আসামি হলো- হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ। তারা সবাই কারাগারে।

ঘটনাস্থলে নিহত পাঁচ আসামি হলো- রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল।

এছাড়া বিভিন্ন ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযানের সময় নিহত ৮ আসামি হলো- তামিম চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ার জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। এ সময় তাদের গুলিতে দুই পুলিশ সদস্য নিহত হন। পরে অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করে পুলিশ।

#এমএস

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close