বিশ্বজুড়ে
মহারাষ্ট্র নিয়ে উত্তাল ভারতের পার্লামেন্ট
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ মহারাষ্ট্রের ভাগ্য নির্ধারিত হবে কাল মঙ্গলবার। বিবদমান দুই পক্ষের দাবি ও পাল্টা দাবি শোনার পর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এন ভি রামান্না, বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ জানিয়ে দেন, কাল সকাল সাড়ে দশটায় এই মামলার রায় দেওয়া হবে।
আজ সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ সুপ্রিম কোর্ট যখন দেড় ঘণ্টার শুনানি শেষে এই কথা জানাচ্ছেন, দেশের সংসদ ততক্ষণে উত্তাল। লোকসভা ও রাজ্যসভা দুই কক্ষের অধিবেশনই কংগ্রেসসহ অন্য বিরোধী দলের তুমুল বিক্ষোভে পণ্ড হওয়ার জোগাড়। লোকসভায় প্রশ্নোত্তরপর্বে উঠে দাঁড়িয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার, প্রশ্ন করব বলে এসেছি কিন্তু কোনো প্রশ্নই করার মতো মানসিকতা নেই। মহারাষ্ট্রে গণতন্ত্রকে খুন করা হয়েছে। প্রশ্ন করার কোনো মানে হয় না।’
লোকসভার ওয়েলে নেমে আসেন কংগ্রেস সদস্যরা। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দিতে থাকেন সরকারবিরোধী স্লোগান। মার্শাল ডাকতে হয় স্পিকারকে। সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস সদস্যরা তখন সভাকক্ষ ত্যাগ করে বেরিয়ে যান। রাজ্যসভা মুলতবি করে দেওয়া হয় দুপুর পর্যন্ত। কংগ্রেস সদস্যরা এরপর সংসদ ভবন চত্বরে গান্ধী মূর্তির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। নেতৃত্ব দেন কংগ্রেস সভানেত্রী স্বয়ং। দুই পক্ষ এরপরও শান্ত না হওয়ায় কাল বেলা দুইটা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করা হয়।
গতকাল রোববারই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিলেন আজ সকাল সাড়ে দশটায় দুটি চিঠি জমা দিতে হবে। একটি চিঠি মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারিকে লেখা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফাডনবিশের, যাতে তিনি সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছেন। অন্যটি তাঁকে সরকার গড়ার আহ্বান জানিয়ে রাজ্যপালের লেখা। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে সেই চিঠি জমা দেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তৃতীয় একটি চিঠিও তিনি জমা দেন, যা এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারের লেখা, যেখানে ফাডনবিশ সরকারকে সমর্থনের কথা বলা হয়েছে। সেই চিঠিতে এনসিপির ৫৪ বিধায়কের সই রয়েছে। ফাডনবিশের চিঠিতে বলা হয়েছে, তাঁদের পক্ষে রয়েছে মোট ১৭০ বিধায়কের সমর্থন।
এরই পাল্টা শিবসেনা, এনসিপি ও কংগ্রেসের পক্ষে দাবি করা হয়, তাদের পক্ষে রয়েছে ১৬২ জনের সমর্থন। কপিল সিবাল ও অভিষেক সনু সিংভিরা তাঁদের দাবির সমর্থনে বিধায়কদের হলফনামাও সঙ্গে নিয়ে যান। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে বলা হয়, রাজ্যপাল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা সমর্থনের চিঠির ভিত্তিতেই। অতএব তিনি অগণতান্ত্রিক কিছু করেননি। অন্যদিকে কপিল সিবাল বলেন, চরম গোপনীয়তার মধ্যে তড়িঘড়ি সবকিছু করা হয়েছে। অবিলম্বে নতুন এই সরকারকে আস্থা ভোট নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হোক।
আপাতত সব চোখ সুপ্রিম কোর্টের ওপর নিবদ্ধ। কাল সকাল সাড়ে দশটায় সুপ্রিম কোর্ট তাঁর রায় জানাবেন। ২০১৮ সালে কর্ণাটকে এই ধরনের পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আস্থা ভোট নেওয়ার নির্দেশ জারি করেছিলেন। ভোট গ্রহণের আগেই ইস্তফা দিয়েছিলেন ইয়েদুরাপ্পা। এবার মহারাষ্ট্রে বিজেপি এবং বিরোধী দুই শিবিরেরই দাবি, সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন তাদের রয়েছে।
#এমএস