শিক্ষা-সাহিত্য
গণবি’তে বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের শিক্ষা সমাপনী উৎসব
মোঃ আশিকুর রহমান, গবি প্রতিনিধিঃ সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি (বিএমবি) বিভাগের পক্ষ থেকে গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নতুন প্রণীত নিয়মকে সম্মান জানিয়ে আজ র্যাগ ডে ও র্যাগিং বয়কট করে শিক্ষা সমাপনী উৎসব পালন করা হয়।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল ১১ টা ৩০মিনিটে উক্ত বিভাগের দ্বিতীয় তলায় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয় । বিএমবি বিভাগের এটিই ছিল প্রথম শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠান ।
শিক্ষা সমাপনী বা র্যাগ ডে মানে ৪ বছরের শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি দিন। দেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই এই দিনটি পালন করা হয় রং খেলা ও বিভিন্ন সাজ সজ্জার মাধ্যমে। গণ বিশ্ববিদ্যালয়েও ইতোপূর্বে জমকালো আয়োজনে রং ছিটিয়ে এবং হিন্দি গানসহ নেঁচে-গেয়ে অনুষ্ঠানটি পালন করা হতো। কিন্তু সোমবার (১১নভেম্বর) গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ দেলোয়ার হোসেনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে র্যাগ ডে’তে রং ছিটানোসহ বিভিন্ন অপসংস্কৃতি ও র্যাগিংকে সম্পুর্নরুপে নিষিদ্ধ করা হয়। র্যাগ ডের নামে রঙ খেলা, গান, নাচ ইত্যাদি সকল কিছু বন্ধ ও আদেশ অমান্যকারীদের উপর জরিমানার কথাও উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। প্রশাসনের এমন উদ্দ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ভিন্ন ভাবে পালন করা হয় আজকের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠান।
বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শাকিল মাহমুদ জানান, “গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমাদের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগ অন্যতম একটি বিভাগ। এই বিভাগের গুনগত মান অন্যান্য বিভাগ থেকে অবশ্যই আলাদা। তাই আমাদের কাজের ধরনও ভিন্ন। আমরা আজকে ভিন্নভাবে শিক্ষা সমাপনী পালন করছি যা গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম। আমরা চাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ভালো মানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আমদেরকে অনুসরণ করুক, তাদেরকে আমরা দেখাতে চাই কোনো প্রকার অশালীন ও অনৈতিক কাজ বাদ রেখেও শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠান করা যায়।”
বিভাগের শিক্ষক ড. ফুয়াদ হোসেন বলেন, “আমরা প্রশাসনের প্রনিত আইনকে সম্মানের সাথে স্বাগত জানাই।একই সাথে আমাদের আজকের প্রথম শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানে র্যাগ ও র্যাগ ডে কে সম্পুর্নরুপে বয়কট জানাচ্ছি। আমরা এমন কোনো সংস্কৃতি চাই না যেখানে অশ্লীলতার ছোয়া আছে। আমরা আমাদের ভিন্নভাবে আয়োজিত এই সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেয়ালে রঙ নয় বরং শিক্ষার্থীদের মনের রঙে রাঙানোর নতুন সংস্কৃতির জন্ম দিতে চাই।”
বিদায় বেলার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বিএমবি বিভাগের ইমাম সোয়াদ ও গোলাম মোসাইব বলেন, “আজকের দিনটি আমাদের জন্য স্বরনীয় একটি দিন। যদিও প্রশাসনের আদেশে আমরা আশানুরূপভাবে দিনটি পালন করতে পারছি না তথাপি এই দিনটিতে আমরা মনে কোনো প্রকার আক্ষেপ নয় বরং আমরা প্রশাসনের প্রনিত নতুন আইনকে সম্মান জানিয়ে শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও বিভাগের সবাইকে নিয়ে আনন্দ ভাগ করে নিতে চায়।”
প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী অরিনা ইরফান অন্তু জানায়, “প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত অবশ্যই আমাদের সবাইকে অনেক বড় ধাক্কা দিয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম অন্যান্য বিভাগের মতো আমরাও এই দিনটিকে অনেক বেশি জাকজমক করতে। আমি প্রশাসনের উক্ত সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই কারন আমরা এর ফলে নতুন কিছু অভিজ্ঞতাও অর্জন করতে পেরেছি।
#এমএস