ব্যাংক-বীমাশিল্প-বানিজ্য
নগদে ১০ হাজার টাকার বেশি লেনদেন না করার প্রস্তাব দুদকের
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ঘুষ ও অর্থ পাচার বন্ধে ১০ হাজার টাকার বেশি অর্থ নগদে লেনদেন না করার প্রস্তাব দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এজন্য ১০ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে সব লেনদেন ব্যাংকিং চ্যানেলে করার ওপর বাধ্যবাধকতা আরোপের পরামর্শ দিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোয় চিঠি পাঠিয়েছে দুদক।
দুদক সচিব মুহম্মদ দিলোয়ার বখত স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি ১৪ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়ার কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) আওতায় অর্থ লেনদেনের পরিমাণ সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাবও করা হয়েছে। পাশাপাশি ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টার (ইসিআর) ব্যবহার হলে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আদায় ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব বলে উল্লেখ করা হয়েছে এতে।
বর্তমানে ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর মাধ্যমে দৈনিক সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা এবং ‘বিকাশ’, ‘রকেট’-এর মতো এমএফএসের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা লেনদেন করতে পারেন একজন গ্রাহক। তবে নগদ লেনদেনের ক্ষেত্রে এখনো কোনো সীমা নির্ধারণ করা নেই, যদিও আয়কর আইনে ৫০ হাজার টাকার বেশি লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করার কথা বলা আছে।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে যেকোনো পরিমাণ আর্থিক লেনদেন নগদে করার সুযোগ থাকায় একদিকে ঘুষ, মানিলন্ডারিংসহ অন্যান্য আর্থিক অপরাধ যেমন বাড়ছে; অন্যদিকে লেনদেন রেকর্ডভুক্ত করার বাধ্যবাধকতা না থাকায় সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ১০ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে সব লেনদেন ব্যাংক, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে করা সম্ভব হলে দুর্নীতি কমবে বলে আশা করা যায়। দুর্নীতি রোধে লেনদেনের পদ্ধতির (মুড অব পেমেন্ট) ক্ষেত্রে সরকার উপর্যুক্ত ব্যবস্থা চালু করতে পারে কিনা, তা বিবেচনা করতে পারে।’
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, ‘অনুরূপভাবে মোবাইল ফোনে অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে দৈনিক সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে ১০ হাজার টাকা যথাযথ ইনভয়েস/রিসিট প্রদানপূর্বক (যেখান থেকে পাঠানো হবে এবং যেখানে রিসিভ হবে—দুই ক্ষেত্রেই) পদ্ধতি চালু করলে ঘুষ, মানিলন্ডারিংসহ আর্থিক অপরাধ হ্রাস পাবে বলে দুর্নীতি দমন কমিশন মনে করে।’