দেশজুড়ে
বানরের আক্রমণে আহত ৭
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নে বানরের আক্রমণে ৭ ব্যক্তি আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত দুই মাস ধরে এলাকায় বানরের উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। বানরের উৎপাতে অতিষ্ঠ মানুষ।
গত শনিবার ভোররাতে বানরের আক্রমণে আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৭) নামে এক ব্যবসায়ী গুরুতর আহত হন। এছাড়া গত দুই মাসে শাহবাজপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের কনস্টেবল মাসুদ আহমদ, ইউনিয়নের সায়পুর গ্রামের বাসিন্দা মাতাবুর রহমান ও আমান আহমদ, রাজপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস, পূর্ব দৌলতপুর গ্রামের ছুরতুন বেগম নামের এক নারী এবং স্টেশনবাজার এলাকার সুলেমান আহমদসহ আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নে ৮টি চা বাগান রয়েছে। ইউনিয়নের পাহাড় ও চা বাগানে অনেক বানর রয়েছে। এরা খাবারের সন্ধানে অনেক বছর ধরেই দল বেঁধে লোকালয়ে চলে আসে। মানুষের ক্ষেতের ফসল খেয়ে কিংবা নষ্ট করে আবার বনে চলে যায়। বছরখানেক আগে দলছুট একটি বানর লোকালয়ে আসে। বানরটি মানুষের সঙ্গে ভালো আচরণ করত। মানুষও ভালোবেসে তাকে লালন-পালন করছিল। এরমধ্যে আরও ৪-৫টি বানর লোকালয়ে আসে। ছয় মাস আগে আহত (ল্যাংড়া) আরেকটি বানর আসে। আহত বানরটি শান্ত স্বভাবের বানরটিকে তাড়িয়ে দেয়। বানরগুলো শাহবাজপুর স্টেশন বাজার, রাজপুর, সায়পুর, পূর্ব দৌলতপুর এলাকায় ঘোরাফেরা করে। দুই মাস আগে হঠাৎ করে আহত বানরটি মানুষের ওপর আক্রমণ শুরু করে। ভোরবেলা ও রাতে একা পেলে লোকজনকে আক্রমণ করে সে। গত দুই মাসে এই বানরের আক্রমণে ৭ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এতে মানুষের মাঝে একটা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অন্য বানরগুলো মানুষের ঘরে প্রবেশ করে রান্না করা খাবার নিয়ে দৌড় দেয়, ফসল নষ্ট করে। কাপড়-চোপড় নিয়ে দৌড় দেয়। বানরের এই উৎপাতে মানুষ অতিষ্ঠ। এছাড়া ইউনিয়নের আতুয়া, বড়আইল এলাকার মানুষও বানরের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে গেছেন।
শাহবাজপুর স্টেশন বাজার এলাকার বাসিন্দা সমাজসেবেক রফিক উদ্দিন আহমদ বলেন, বেশ কয়েকজন বানরের হামলায় আহত হয়েছেন। মানুষের ঘরে ঢুকে বানর রান্না করা খাবার নিয়ে যায়। ফসল নষ্ট করে। মহিলা ও বাচ্চারা আতঙ্কে আছেন।
রাজপুর এলাকার জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘বানরটি একা পেলেই হঠাৎ আক্রমণ করে। এখন আমার ছোট মেয়ে ভয়ে ঘর থেকে বের হয় না। নিজেও আতঙ্কে চলাফেরা করি, কখন আক্রমণ করে। ভয়ে এখন ভোরে বের হই না।’
স্থানীয় উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহমদ জুবায়ের লিটন বলেন, ‘বানরটি বেশ কয়েকজনকে আহত করেছে। লোকজন আমাদের জানিয়েছে। আমরাও তাৎক্ষণিক বন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা একদিন আসবেন। তারা জানিয়েছেন, এগুলো ধরা যায় না। তবে মানুষকে সচেতন করে যাবেন। যাতে বানরগুলোকে উত্ত্যক্ত না করা হয়। অনেক সময় মানুষ বানরকে উত্ত্যক্ত করে। এর জন্যও হয়তো ওরা কামড় দেয়।
বন বিভাগের বড়লেখা রেঞ্জের সহযোগী কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাস মঙ্গলবার বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে আমরা খবর পেয়েছি। আমাদের অফিসে বানর ধরার কোনো যন্ত্রপাতি নেই। বিষয়টি মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী রেঞ্জের সহকারী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বিষয়টি অবগত করেছি।
/একে