দেশজুড়েপ্রধান শিরোনামস্বাস্থ্য
অপ্রয়োজনীয় সিজারে হাতিয়ে নেয়া হয় ১২০০ কোটি টাকা
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সিজারে সন্তান প্রসবের মাধ্যমে প্রতি বছর সারাদেশে রোগীদের কাছ থেকে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়, যা সর্ম্পূণ অপ্রয়োজনীয় ও ঝুঁকিপূর্ণ—কারণ এ ধরনের ডেলিভারি মা এবং শিশু দুজনকেই ঝুঁকিতে ঠেলে দেয়। এছাড়া বাংলাদেশে বেসরকারি হাসপাতালে প্রসবের ৮০ শতাংশেরও বেশি সিজারের মাধ্যমে হয়ে থাকে, যা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়।
প্রসূতি মায়েদের ব্যথামুক্ত নরমাল ডেলিভারি সেবা চালুর বিষয়ে জানাতে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ইমপাল্স হাসপাতালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, অনেক গর্ভবতী মা প্রায়ই ব্যথা আতঙ্কের কারণে সন্তান প্রসব করার জন্য সিজারিয়ান অপারেশন করতে বাধ্য হন। তবে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করার পরেও তাদের প্রসব পরবর্তী দীর্ঘ মেয়াদী বিভিন্ন জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়।
ইমপাল্স হেলথ সার্ভিসেস অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহের আল-আমিন বলেন, ‘সিজারিয়ান কোনো মতেই স্বাভাবিক প্রসবের বিকল্প হতে পারে না। আবার আধুনিকতার নিরিখে প্রসবের সময় ব্যথাও কোনমতে কাম্য নয়। এসব চিন্তা করেই আমরা গত বছর থেকে ব্যথামুক্ত নরমাল ডেলিভারি শুরু করেছি এবং যথেষ্ট সাফল্যও অর্জন করেছি।’
তিনি বলেন, সিজারিয়ান প্রসবের কারণে মায়েরা অনেকগুলো সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। কারণ এটি একটি অপারেশন, যা সাধারণ প্রসবের মাধ্যমে এড়ানো সম্ভব।
অধ্যাপক ডা. জাহের আল-আমিন বলেন, সাধারণ ব্যথাহীন নরমাল ডেলিভারির জন্য যা প্রয়োজন তা হচ্ছে একটি সুসজ্জিত ব্যবস্থাপনা, পর্যাপ্ত এনেসথিয়েসিস্ট, ২৪ ঘণ্টার জন্য সার্বক্ষণিক কনসালটেন্টদের উপস্থিতি, যার মাধ্যমে প্রি-ডেলিভারি, ডেলিভারি এবং ডেলিভারি পরবর্তী সেবা দক্ষতার সঙ্গে করা সম্ভব। ইমপাল্স হসপিটাল হচ্ছে বাংলাদেশে একমাত্র স্বাস্থ্য কেন্দ্র যেখানে মায়েরা পাবেন সর্বোত্তম ব্যথাহীন স্বাভাবিক ডেলিভারি সেবা। আর আমরা রোগীর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, এই উদ্যোগকে আরও বেগবান এবং অত্যাধুনিক করতে বিদেশ থেকে বিশেষ থেকে টিম আনা হয়েছে। যারা আগামী এক সপ্তাহ সারাক্ষণ এখানে থেকে ইমপালসের সমস্ত ডেলিভারি পরিচালনা করবেন এবং আমাদের স্থানীয় যে দুর্বলতা রয়েছে তা দূর করতে সক্ষম হবেন।
পোর্টিয়নকুলা ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের সিনিয়র কনস্যালটেন্ট ডা. কাজী নাফিজা হামিদ তার উপস্থাপনায় বলেন, উন্নত বিশ্বে সব মাই ব্যথামুক্ত নরমাল ডেলিভারি প্রত্যাশা করে থাকে। তারা চায় সন্তান প্রসব পরবর্তী কাজগুলোও যেন ব্যথামুক্ত হয়।
এপিডুরাল অ্যানালজেসিয়া পদ্ধতি সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এটি ব্যবহার করলে রোগীরা সম্পূর্ণ ব্যথামুক্তভাবে তাদের সন্তান প্রসব করতে পারে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহলিা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়রে অতিরিক্ত সচবি আইনুল কবীর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়রে যুগ্মসচবি তপন কুমার বশ্বিাস, সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের সিনিয়র কনস্যালটেন্ট ডা. মো. তৌফিক ইসলাম, আয়ারল্যান্ড ওয়াটারফোর্ড ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের সিনিয়র কনস্যালটেন্ট জিন্নুরাইন জয়গিদার প্রমুখ।
#এমএস