দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

টোল বসানো হবে চারলেনের জাতীয় মহাসড়কে

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের আওতাধীন চারলেনের মহাসড়কগুলোতে গাড়ি চলাচলের ওপর টোল আদায় হবে। এ লক্ষ্যে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। কোন মহাসড়কে কত টোল হবে, আদায় পদ্ধতি নির্ধারণে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব তৈরি করতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হচ্ছে। ওই কমিটির সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-ফরিদপুর (ভাঙ্গা) ও জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক বিবেচনায় রয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) একনেকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জাতীয় মহাসড়কগুলো টোলের আওতায় আনার নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

তারা বলেন, মহাসড়কগুলোতে টোল আদায় সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা ও অবকাঠামো নির্মাণের প্রয়োজন হবে। এছাড়া ঢাকা-রংপুর ও ঢাকা-ফরিদপুর (ভাঙ্গা) মহাসড়ক নির্মাণাধীন রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এসব তথ্য জানিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমে বলেন, চারলেনের সড়কগুলোতে টোল আরোপের পরিকল্পনা আছে। তবে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব তৈরি করব। তা অনুমোদনের পর কার্যকরের দিকে যাব।

সড়ক ও জনপথ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তিনটি মহাসড়কে টোল আদায় করা হচ্ছে। এ তিন মহাসড়কের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী টোলের হারেও ব্যবধান রয়েছে। এর মধ্যে নলকা-হাটিকামরুল-বনপাড়ার ৫০ কিলোমিটার সড়কে ২০০৩ সালের ১ মে থেকে টোল আদায় হচ্ছে। এ সড়কে ট্রেইলারে ১৯০ টাকা, হেভি ট্রাকে ১৫০ টাকা, বড় বাসে ৬০ টাকা, মাইক্রোবাসে ৩০ টাকা, ৩-৪ চাকার গাড়িতে ১০ টাকা ও মোটরসাইকেলপ্রতি ৫ টাকা হারে টোল আদায় করা হয়। ২০০৫ সালের ১০ মার্চ থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জগদীশপুর-শেরপুর অংশে (রুস্তমপুর টোল প্লাজা) টোল আদায় করা হয়। ৭৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মহাসড়কে ট্রেইলারে ২৮০ টাকা, হেভি ট্রাকে ২২৫ টাকা, বড় বাসে ৭৫ টাকা, মাইক্রোবাসে ৪৫ টাকা, ৩-৪ চাকার গাড়িতে ১০ টাকা ও মোটরসাইকেলপ্রতি ৫ টাকা হারে টোল আদায় করা হয়। আর ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর থেকে টোল আদায় চলছে চট্টগ্রাম পোর্ট একসেস রোডে। মাত্র ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ হওয়ায় এ সড়কে টোলের হার অনেক কম। সংশ্লিষ্টরা জানান, মহাসড়কে টোল আরোপের ক্ষেত্রে এ তিনটি সড়কের টোল হার বিবেচনায় রাখা হবে।

বিষয়টি স্বীকার করে সড়ক বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ চারলেন হলেও এ মহাসড়কের সঙ্গে আলাদা সার্ভিস লেন নেই। এ দুটি মহাসড়কে ধীরগতি ও দ্রুতগতির গাড়ি একই সঙ্গে চলাচল করে। অপরদিকে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত মহাসড়কটির সঙ্গে পৃথক সার্ভিস লেন করা হচ্ছে। তবে এ সড়কটির কাজ ২০২০ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া ‘সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্পের আওতায় এলেঙ্গা-হাটিকামরুল-রংপুর মহাসড়কটির সঙ্গে সার্ভিস লেন রাখা হচ্ছে। এটি শেষ হবে ২০২১ সালের ৩১ আগস্ট। এমন পরিস্থিতিতে এসব মহাসড়কে শিগগিরই টোল আদায়ের কাজ শুরু করা কঠিন। তবে উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও মহাসড়কে টোল আদায় করা সম্ভব বলেও মনে করেন তারা।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close