দেশজুড়ে
৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণ; মসজিদের ইমামসহ আটক ৬
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সদর উপজেলার চাঁনমারী এলাকায় ৮ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে একটি মসজিদের ইমামকে আটক করেছে র্যাব-১১।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল ৬ টার দিকে র্যাব-১১ এর একটি টিম সদর উপজেলার ফতুল্লার চাঁনমারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষক ফজলুর রহমান ওরফে রফিকুল ইসলামকে আটক করে। পাশাপাশি এ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগে মসজিদ কমিটির সভাপতিসহ আরও ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, রমজান আলী, মো. গিয়াসউদ্দিন, হাবি এ এলাহী ওরফে হবি, মো. মোতাহার হোসেন এবং মো. শরিফ হোসেন। অভিযুক্ত ফজলুর রহমান ওরফে রফিকুল ইসলাম বায়তুল হাফেজ জামে মসজিদের ইমাম এবং নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার সাবাপাড়া গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে।
র্যাব-১১ এর মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন জানান, শিশুটি একটি মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। সে প্রায় রাতেই ঘুমের মধ্যে কেঁদে উঠে। বিভিন্ন কবিারজ দিয়ে চিকিৎসা করেও ফল পাচ্ছিলো না তার পরিবার। এরমধ্যে শিশুটির বাবা জানতে পারেন বায়তুল হাফেজ জামে মসজিদের ইমাম ফজলুর রহমান ওরফে রফিকুল ইসলাম ঝাঁড়ফুক, পানি পড়া দেন। সে মোতাবেক তিনি অভিযুক্ত ইমামের কাছ থেকে পানিপড়া নিয়ে আসেন। কিন্তু এতেও কাজ হচ্ছিলো না। পরে ব্যাপারটি ওই ইমামকে জানালে তিনি শিশুটির বাড়ি এসে ‘বাড়ি বন্দি’ চিকিৎসা করে যান।
তিনি আরও জানান, ‘বাড়ি বন্দি’ চিকিৎসার পরও শিশুটি ভালো না হওয়াতে তিনি ধর্ষণ ঘটনার আগেরদিন ইমামকে ফোন করেন এবং ব্যাপারটি জানালে ইমাম পরদিন ফজরের আযানের পরপর শিশুটিকে মসজিদে নিয়ে আসতে বলেন। কথা মতো মেয়েকে নিয়ে মসজিদে হাজির বাবা। তখন তাদেরকে মসজিদের তৃতীয় তলায় যেখানে ইমামের শোবার ঘর সেখানে নিয়ে যান। এবং শিশুটির বাবাকে কৌশলে মোম ও আগরবাতির জন্য বাইরে পাঠিয়ে দেন ইমাম। এরপর তিনি মসজিদের মুয়াজ্জিনকে নিচের গেট তালাবদ্ধ করার নির্দেশ দিয়ে শিশুটির হাত ও মুখ বেঁধে ধর্ষণ করেন এবং শিশুটির গলায় ছুরি ধরে ঘটনাটি কাউকে না বলার হুমকি প্রদান করেন। এরপর তড়িঘড়ি করে শিশুটিকে তার বাবার কাছে বুঝিয়ে দিয়ে মসজিদ থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
আলেপ উদ্দিন জানান, শিশুটি বাড়ি আসার পর পুরো ঘটনাটি তার বাবা-মা’র কাছে খুলে বলে এবং সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এবং শিশুটির পরিবার মসজিদে এসে কমিটির লোকদের কাছে বিচার দিলে মসজিদ কমিটির লোক উল্টো শিশুটির পরিবারকে হেনস্থা করে। সেই সাথে ধর্ষককে রক্ষা করতে মসজিদ কমিটির লোকজন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যাতে করে শিশুটির পরিবার থানা কিংবা হাসপাতালে যেতে না পারে। কিন্তু শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে লুকিয়ে শিশুটিকে শহরের জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায় তার পরিবার। কিন্তু সেখানেও শিশুটিকে অপহরণ ও হত্যা করার জন্য কয়েক দফা চেষ্টা চালায় ইমাম অনুসারি আটক ওই পাঁচজন।
এরপর বুধবার ভোরে হাসপাতালে গিয়ে শিশুটির নিরাপত্তা এবং চাঁদমারি এলাকা থেকে ধর্ষক ইমামসহ তার পাঁচ সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়।