দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
৭১ বছরে পা দিলো দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলা
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সময়ের পরিক্রমায় নানা বাধা বিপত্তি পেরিয়ে ৭০ বছরে শেষ করে ৭১ বছরে পা দিলো দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলা। ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর বিশ্বের একমাত্র প্রাকৃতিক বন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করে মোংলা বন্দর। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ বন্দর এখন লাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান।
বন্দরের বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, দিবসটি উপলক্ষে করোনা পরিস্থিতির কারণে সীমিত পরিসরে কোনো আড়ম্বড়তা ছাড়াই স্বাস্থ্যবিধি ও সচেতনতা মেনে র্যালি, সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়, দুপুরে আলোচনা সভা ও বন্দরের সাফল্য-অগ্রগতি কামনায় মিলাদ মাহফিলের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-সচিব ও বন্দর চেয়ারম্যানের পার্সোনাল সেক্রেটারি মো. মাকরুজ্জামান।
মোংলা বন্দরের ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করে ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর। ১১ বছরে এ বন্দরের উন্নয়নে ৫০টির বেশি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এ বন্দর।
জানা গেছে, ১৯৫০ সালের ১১ ডিসেম্বর বৃটিশ বাণিজ্যিক জাহাজ ‘দি সিটি অফ লিয়নস’ সুন্দরবনের মধ্যে পশুর নদীর জয়মনিগোল নামক স্থানে নোঙর করে। এটাই ছিল মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠার শুভ সূচনা। ১৯৫১ সালের ৭ই মার্চ জয়মনির গোল থেকে ১৪ মাইল উজানে চালনা নামক স্থানে এ বন্দর স্থানান্তরিত হয়ে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত বন্দরের কার্যক্রম চলে।
এরপরই স্যার ক্লাইভ অ্যাঙ্কনিস পশুর ও শিবসা নদী জরিপের জন্য আসেন। দীর্ঘ বিস্তৃত জরিপের পর তিনি তার রিপোর্টে বন্দরকে চালনা থেকে সরিয়ে মোংলায় নেয়ার প্রস্তাব করেন।
চালনা থেকে ৯/১০ মাইল ভাটিতে মোংলা নদী এবং পশুর নদীর মিলন স্থলে ছিলো ‘মোংলা’। এখানে নদীর নাব্যতাও ছিল বেশি। সুবিস্তৃত স্থলভাগ ও বন্দর নির্মাণের জন্য ছিল উপযোগী। উপরোক্ত প্রস্তাব অনুযায়ী ১৯৫৪ সালের ২০ জুন এ বন্দরকে সরিয়ে মোংলা নামক স্থানে নিয়ে আসা হয়।
বন্দর যখন চালনায় ছিল তখন এটা ছিল একটা অচেনা গ্রাম। নাম ছিল শেলাবুনিয়া। তবে বন্দর স্থানান্তরের পরই ঘটে পরিবর্তন। একটা অচেনা ক্ষুদ্র গ্রাম পায় আন্তর্জাতিক পরিচিতি। মোংলা নদীর তীরে স্থাপন হওয়ায় এ বন্দরের নাম হয় মোংলা। জনশূন্য এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে কলরবে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জাতীয় অর্থনীতিসহ এ অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছে মোংলা সমুদ্র বন্দর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও মোংলা-রামপালের বর্তমান সাংসদ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহারের বিশেষ পদক্ষেপ ও পৃষ্ঠপোষকতায় মোংলা বন্দর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে সুনাম অর্জন করেছে।
/এন এইচ