আমদানি-রপ্তানীপ্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্য
৫ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরোপুরি সচল হচ্ছে
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ করোনার প্রভাব মোকাবিলা করে অর্থনীতিকে স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে নিতে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরোপুরি সচল করা হবে বলে জানা গেছে।
এই পর্যায়ে দেশের আর্থিক খাত আগের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হবে। সব খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে সব ধরনের গণপরিবহন আগের নিয়মে চলাচল শুরু হবে। এরইমধ্যে খুলে দেয়া হয়েছে দেশের পর্যটন খাত। এছাড়া স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে ব্যাংকিং খাতেও।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর আলোকে এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।
এরইমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বিভিন্ন খাতের জন্য স্বাস্থ্যবিধি প্রণয়ন করে সেগুলো সংশ্লিষ্ট খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। এগুলো মেনে চলতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কোরবানির ঈদের পরই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার কাজ শুরু হয়েছে। এর প্রভাবে করোনার বিস্তার খুব একটা বেশি ঘটেনি বলে মনে করছে সরকার। সে কারণে এই দফায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিধি আরো বাড়ানো হচ্ছে।
৫ সেপ্টেম্বর থেকে ব্যাংকগুলোর সব ধরনের কার্যক্রম পুরোদমে চলবে। এর মধ্যে কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে সংশ্লিষ্টদের ছুটি দেয়া হবে। তবে পুরো শাখা বা বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ করা হবে না। কেননা ঋণপ্রবাহ বাড়াতে হলে ব্যাংকগুলোকে সক্রিয় করতে হবে। এরইমধ্যে বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা, এনজিও কার্যক্রম সীমিত আকারে চালু করা হয়েছে। এই দফায় এসব প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হবে।
ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম সীমিত আকারে চলায় বিশেষ করে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের অর্থ গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেয়া ও ঋণ বিতরণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এসব কার্যক্রমে গতি আনতে প্রতিষ্ঠানগুলোয় স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির পরিচালক ও করোনায় ক্ষুদ্রঋণবিষয়ক মনিটরিং সেলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইয়াকুব হোসেন গণমাধ্যমে বলেন, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে এজেন্ট ব্যাংকিংসহ রেমিট্যান্স কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এ খাতে সব কার্যক্রম স্বাভাবিক করা হচ্ছে।
সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত থাকলেও যারা সক্ষম, তারা কিস্তি পরিশোধ করতে পারবেন।
পর্যটন খাত এরইমধ্যে খুলে দেয়া হয়েছে। তবে পর্যটন স্পটগুলোয় পর্যটকদের আনাগোনা কম। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে গণপরিবহন স্বাভাবিক নিয়মে চলাচল করবে।
৫ সেপ্টেম্বর থেকে রেলওয়ের সব যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে। তবে আসনের অর্ধেক যাত্রী বহন করা হবে। বৃহস্পতিবার থেকে আন্তঃনগর সব ট্রেনের টিকেট দেয়া হচ্ছে। এখন থেকে আগের মতো ১০ দিনের আগাম টিকেট পাওয়া যাবে।
আন্তঃজেলা বাস সার্ভিস ও নগর পরিবহনে সব সিটে যাত্রী বহনের সিদ্ধান্ত সেপ্টেম্বরের প্রথম দিন থেকে কার্যকর হতে পারে বলে জানা গেছে। সে ক্ষেত্রে বাড়তি ভাড়া প্রত্যাহার করা হবে দূরপাল্লার ও নগর পরিবহনের। ওই সময় থেকে লঞ্চসহ অন্যান্য গণপরিবহনও স্বাভাবিকভাবে চলবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী করোনার কারণে কওমি মাদরাসা ছাড়া দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দাফতরিক কার্যক্রম ৫ সেপ্টেম্বর থেকে চালু করা হবে।
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণের শুরুতে মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে যায়। ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয় অঘোষিত লকডাউন। জুন থেকে সীমিত আকারে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করা হয়। এরপর আগস্ট থেকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরো বাড়ানো হয়।
/এন এইচ