ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ভারতের ১৪টি রাজ্যের ৩০ শতাংশ নারী মনে করেন বউ পেটানো দোষের কিছু নয়। নির্দিষ্ট কারণেই স্বামীর হাতে মারধরের শিকার হয়ে থাকেন স্ত্রীরা। তুলনায় কম সংখ্যক পুরুষ এই কাজকে যুক্তিযুক্ত বলে মনে করেন। দেশটির সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় উঠে এল এমনই উদ্বেগজনক তথ্য। রোববার (২৮ নভেম্বর) দ্য হিন্দুস্থান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ভারতের জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, ভারতের তিনটি রাজ্যের ৭৫ শতাংশ বা তার বেশি নারী ও পুরুষেরা মনে করেন স্বামীর হাতে স্ত্রী মার খাওয়া ঠিক। এই তিন রাজ্যগুলো হলো তেলেঙ্গানা (৮৪ শতাংশ), অন্ধ্রপ্রদেশ (৮৪ শতাংশ) ও কর্ণাটক (৭৭ শতাংশ)। শতাংশের হিসেবে খুব বেশি পিছিয়ে নেই মণিপুর, কেরল, জম্মু ও কাশ্মীর, মহারাষ্ট্র ও পশ্চিমবঙ্গও। পশ্চিমবঙ্গের ৪২ শতাংশ নারী মনে করেন বউ পেটানোর মধ্যে কোনো ভুল নেই।
প্রশ্ন রাখা হয়েছিল স্বামী যদি স্ত্রীকে আঘাত করেন বা মারধর করেন, আপনার মতে কি তা যুক্তিসঙ্গত? তার উত্তরেই দেশের ১৪টি রাজ্যের ৩০ শতাংশ নারী জানিয়েছেন, এই কাজ ঠিক। যারা বলছেন বউ পেটানো ঠিক, কোন কোন কারণে তা মনে করছেন? এ ক্ষেত্রে সমীক্ষকেরা সম্ভাব্য সাতটি কারণের কথা জানতে পেরেছেন। ১) স্বামীর সঙ্গে তর্ক করা, ২) স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে না চাওয়া, ৩) স্বামীকে না বলে বাইরে যাওয়া, ৪) সংসার বা সন্তানদের অবহেলা করা, ৫) ভাল রান্না না করা, ৬) বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক আছে বলে স্বামীকে সন্দেহ করা এবং ৭) শ্বশুরবাড়ির মানুষদের ‘অশ্রদ্ধা’ করা। তবে প্রধান কারণটি হলো সংসার বা সন্তানদের অবহেলা করা ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের ‘অশ্রদ্ধা’ করা, মনে করেন বেশিরভাগ রাজ্যের নরীরা।
বউ পেটানো ঠিক? এই প্রশ্নের তালিকায় সবার শেষে রয়েছে হিমাচলপ্রদেশ। রাজ্যটির মাত্র ১৪ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ নারী মনে করেন, কাজটা ঠিক। বাকিরা এই কাজকে ভুল বলেই মনে করেন।
এই বিষয়ে নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ডিরেক্টর বলেন, এটা আসলে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব, যা নারীদের একাংশের মনের গভীরে প্রভাব ফেলেছে। তারা মনে করছেন, পরিবার ও স্বামীর সেবা করে যাওয়াটাই প্রধান কাজ।
/এন এইচ