তথ্যপ্রযুক্তিদেশজুড়ে
১৩ শর্তে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায়ের নির্দেশ
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় খোলা ময়দানে ঈদের জামাতের আয়োজন করা যাবে না। মসজিদে জামাত আয়োজন করা যাবে নির্ধারিত শর্ত ও সামাজিক দূরত্ব মেনে। সন্ধ্যায় এ সম্পর্কিত প্রজ্ঞাপন জারি করে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
দেশে করোনার সংক্রমণরোধে প্রাথমিকভাবে মসজিদে নামাজ আদায় নিরুৎসাহিত করা হলেও, পরিস্থিতি বিবেচনায় শর্ত দিয়ে মসজিদে জামাতের অনুমতি দেয়া হয়। তবে সামাজিক সংক্রমণের শঙ্কায় এবার খোলা ময়দানে ঈদের নামাজের জামাত আয়োজনে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (১৪ মে) সন্ধ্যায় জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, খোলা ময়দানে ঈদের জামায়াত আয়োজন করা যাবে না। ঈদের জামাত হবে মসজিদে। এক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে সামাজিক দূরত্ব। খতিব, ইমাম ও মসজিদ পরিচালনা কমিটিকে দেয়া ১৩ দফা নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, শিশু ও অসুস্থরা পারবেন না জামাতে অংশ নিতে। বিছানো যাবে না কার্পেট, ওযুর স্থানে রাখতে হবে সাবান, স্যানিটাইজার।
১৪৪১ হিজরি/২০২০ সালের পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের নামাজের জামায়াত আদায়ের ক্ষেত্রে প্রজ্ঞাপনে নিম্নবর্ণিত শর্তগুলোর কথা বলা হয়েছে-
১. ইসলামী শরিয়তে ঈদগাহ বা খোলা জায়গায় পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের নামাজের জামায়াত আদায়ের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সারা বিশ্বসহ আমাদের দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিজনিত ওজরের কারণে মুসল্লীদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে এবছর ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদের নামাজের জামায়াত নিকটস্থ মসজিদে আদায় করার জন্য অনুরোধ করা হলো। প্রয়োজনে একই মসজিদে একাধিক জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে;
২. ঈদের নামাজের জামায়াতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিগণ প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন;
৩. করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদে ওযুর স্থানে সাবান/হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে;
৪. মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে;
৫. প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওযু করে মসজিদে আসতে হবে এবং ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে;
৬. ঈদের নামাজের জামায়াতে আগত মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না;
৭. ঈদের নামাজ আদায়ের সময় কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করে দাঁড়াতে হবে;
৮. এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে;
৯. শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যে কোন অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি ঈদের নামাজের জামায়াতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না;
১০. সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিত কল্পে, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে;
১১. করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদে জামায়াত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে;
১২. করোনা ভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করার জন্য খতিব ও ইমামগণকে অনুরোধ করা যাচ্ছে; এবং
১৩. খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, উল্লিখিত নির্দেশনা লঙ্ঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
/এন এইচ