বিশেষ প্রতিবেদনস্বাস্থ্য
১৩০০০ নতুন ডাক্তারদের বিসিএস কবে?
ডা. রিদওয়ান জুবায়ের রিয়াদ, ডা. মনির হোসেন শিমুল:
৩৯তম বিশেষ বিসিএসে যারা উত্তীর্ণ হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারী কর্মস্থলে যোগদান করেছেন এবং যারা করবেন, সবার জন্যে শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো। আপনাদের বহু রাত জাগা কষ্টের ফলে আজ দেশ করোনা পরিস্থিতিতেও থেমে থাকছে না।
৩৯ তম বিসিএসের সার্কুলার হয় ২০১৮ সালে। ২০১৮ সালের জানুৃযারির পর আমরা যারা চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছি, তারা কেউই বিসিএসে অংশগ্রহণ করতে পারিনি। ২০১৮-এর জানুয়ারির পর সর্বমোট ৫টি চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যারমধ্যে ৩টি পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা ইন্টার্নশিপ শেষ করেছে। ৩৯তম বিসিএস থেকে প্রথম ধাপে ৫০০০ ডাক্তার নিয়োগ দেয় সরকার। এতো সংখ্যক ডাক্তার একসাথে সরকারী চাকুরীতে যোগদানের ঘটনা দেশে প্রথম এবং প্রশংসনীয় পদক্ষেপ ছিলো। ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রামণ শুরু হলে, ৩৯তম বিসিএস থেকে আরো ২০০০ ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়। সম্প্রতি দেশের প্রয়োজনে আরো ২০০০ ডাক্তার নিয়োগ দেয়ার মৌখিক নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। দেশের ক্রান্তিলগ্নে দেশের সেবা করার সুযোগ আরও ২০০০ ডাক্তার পাবেন, যা দেশ ও জাতির জন্যই মঙ্গলকর।
কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে যে, নতুন ২০০০ ডাক্তারও ৩৯তম বিশেষ বিসিএস থেকে নেওয়া হবে। এমনটা হয়ে থাকলে, ২০১৮ সালের জানুয়ারি সেশনের পরবর্তী ৫টি চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বিএমডিসির রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত ১৩০০০ চিকিৎসক এবারও বঞ্চিত হবেন স্বপ্নের বিসিএস থেকে। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এদের অনেকেই হয়তো নিয়মিত বিসিএস পরীক্ষার অনেক ধাপ সম্পূর্ণ করতে পারতেন। আমরাও সবার মতো সরকারী চাকুরিতে গিয়ে মানুষের সেবা করার সুযোগ চাই।
সরকারি কর্ম কমিশন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বারবার বলছেন যে, দেশের এই পরিস্থিতিতে নতুন ভাবে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া ও বিভিন্ন ধাপ সমূহ শেষ করা সম্ভব হবেনা। অথচ ৪ জুন তারিখে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে, ১৮মে, ২০২০ ইং তারিখ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১১তম গ্রেডে নতুন ৩০০০ মেডিকেল টেকনোলজিস্টের জন্যে যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলো, তাদের নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সাথে ৪জুন সরকারি কর্ম কমিশন সহকারী প্রোগ্রামার, উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করে। দেশের করোনা পরিস্থিতির অজুহাতে আমাদেরকে নতুন পরীক্ষা ও নিয়োগ থেকে বঞ্চিত করে, বাকি সবার নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রাখার পদক্ষেপ স্পষ্ট পক্ষপাতমূলক ও অবিবেচনাপ্রসূত। তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনেও নিয়োগ পরীক্ষা চাইলেই নেয়া সম্ভব, যার প্রমাণ সম্প্রতি পোষ্টগ্রেজুয়েশন পরীক্ষার নেয়া ব্লক ফাইনাল গুলোতে স্পষ্ট হয়েছে।
দেশের ক্রান্তিলগ্নে আমরাও সমান অবদান রাখার সুযোগ চাই। আমাদের মধ্যে কারো যদি সরকারী ডাক্তার হবার যোগ্যতা থাকে, তবে তারা যেন সেই সুযোগটা পায়, সেটাই আমাদের আবেদন। আমরা ১৩০০০ নতুন চিকিৎসকও দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ চাই। অধিকার আমাদেরও রয়েছে।
/আরএম