দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

হোলি আর্টিজানে হামলার ৮ বছর, প্রকাশ হয়নি পূর্ণাঙ্গ রায়

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও এ মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় এখনো প্রকাশিত হয়নি। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আট মাস আগে গত বছরের ৩০ অক্টোবর এ মামলায় রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। রায়ে সাত জঙ্গিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতের রায়ে সাত জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস হামলা চালায় জঙ্গিরা। তারা অস্ত্রের মুখে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে এবং কুপিয়ে ও গুলি করে মোট ২২ জনকে হত্যা করে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ইতালির নাগরিক নয়জন, জাপানের সাতজন, ভারতের একজন ও বাংলাদেশি তিনজন। সেই রাতে জিম্মিদের মুক্ত করতে অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গিদের বোমা হামলায় নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা।

এ ঘটনায় করা মামলায় ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর বিচারিক আদালত রায় দেন। রায়ে নব্য জেএমবির সাত সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। দণ্ডিত ব্যক্তিরা হলেন রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, হাদিসুর রহমান, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন ও শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ।

বিচারিক আদালত কোনো আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। এ মামলার ডেথ রেফারেন্স নিবন্ধিত হয় ২০১৯ সালে। ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের আপিল ও জেল আপিলের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে হাইকোর্ট গত বছরের ৩০ অক্টোবর রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। ঘোষিত রায়ে সাত জঙ্গিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের ঘোষিত রায়ে বলা হয়, আপিলকারীরা (আসামিরা) ঘটনাস্থলে নিহত ব্যক্তিদের (পাঁচ জঙ্গি) সহায়তা ও প্ররোচিত করেছে, যা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তারা ঘটনাটি সংঘটনে ষড়যন্ত্রসহ সহায়তা ও প্ররোচিত করার কারণে দোষী।
হাইকোর্টে এই মামলায় আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. আরিফুল ইসলাম ও আমিমুল এহসান জুবায়ের। এই দুই আইনজীবী প্রথম আলোকে বলেন, দণ্ডিত সাত আসামি কারাগারে আছেন। এ মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়নি। পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা ও আলোচনা সাপেক্ষে আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
হাইকোর্টের ঘোষিত রায়ে বলা হয়, আপিলকারীরা (আসামিরা) ঘটনাস্থলে নিহত ব্যক্তিদের (পাঁচ জঙ্গি) সহায়তা ও প্ররোচিত করেছে, যা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তারা ঘটনাটি সংঘটনে ষড়যন্ত্রসহ সহায়তা ও প্ররোচিত করার কারণে দোষী। তবে রায়ে বলা হয়, ট্রাইব্যুনাল (বিচারিক আদালত) সন্ত্রাসবিরোধী আইনের যে ধারায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন, তা সঠিক ও আইনানুগ হয়নি।

এ মামলার বিচারপ্রক্রিয়ার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এর পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close