ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ভূপৃষ্ঠের ৩০০০ কিলোমিটার নিচে যে মারাত্মক উত্তপ্ত, গলিত লৌহক্ষেত্র আছে তার নড়াচড়ায় সৃষ্টি হয় পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র। মহাকাশে পৃথিবীর অন্যতম রক্ষাকবচ এই চৌম্বকক্ষেত্র। এই চৌম্বকক্ষেত্রই সূর্যের ক্ষতিকর বিকিরণ থেকে প্রাণীজগৎকে বাঁচায় বা রক্ষা করে থাকে।
চৌম্বকক্ষেত্র যত শক্তিশালী তত বেশি করে তা রুখে দেয় ক্ষতিকর বিকিরণকে। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো, পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের একটা অংশ দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে দুর্বল হচ্ছে আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার মাঝামাঝি জায়গায়। এর নাম সাউথ আটলান্টিক অ্যানোমালি। এটি গত ১০ বছরে বেড়েছে আর শেষ কয়েক বছরে বেড়েছে চোখে পড়ার মতো।
ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার তথ্যমত, কতটা বাড়ছে তা জানা যাচ্ছে সোয়ার্ম স্যাটেলাইট থেকে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এই চৌম্বকক্ষেত্রের শক্তি ২৪০০০ ন্যানোটেসলা থেকে কমে ২২০০০ ন্যানোটেসলা হয়েছে। আরও উদ্বেগজনক হলো, প্রতি বছর ২০ কিলোমিটার করে চৌম্বক ক্ষেত্রের এই দুর্বলতা বিস্তৃত হচ্ছে, যাচ্ছে পশ্চিম দিকে।
জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস-এর বিজ্ঞানী জার্গেন মাজকা বলেন, কিন্তু কেন এই পরিবর্তন তা জানতে হলে পৃথিবীর নিচে লৌহক্ষেত্রের ভেতরে পরিবর্তন বুঝতে হবে। সেটাই এখন চ্যালেঞ্জ।
ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা মনে করছে, চৌম্বকক্ষেত্র দুর্বল হওয়ার অন্যতম কারণ সম্ভবত পৃথিবীর মেরু পরিবর্তন। উত্তর ও দক্ষিণ মেরু পাল্টে যাচ্ছে, এর আগেও এমন ঘটেছে, মোটামুটি প্রতি আড়াই লাখ বছরে এমনটা ঘটে থাকে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর ফলে ক্ষতিকর মহাজাগতিক রশ্মি থেকে চৌম্বকক্ষেত্র যেভাবে পৃথিবীকে রক্ষা করছে তাতে পরিবর্তন ঘটবে, পরিবর্তন ঘটবে মহাকাশের বাতাসেও। এর ফলে উপগ্রহগুলো অকেজো হয়ে যেতে পারে, গোটা বিশ্বের যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বন্ধ হয়ে যেতে পারে টেলিফোন নেটওয়ার্ক, মোবাইলফোনও। এমনকি ওই এলাকা দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমানগুলো নিরাপদ নয় বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
তবে ভরসা একটাই, উত্তর মেরু আর দক্ষিণ মেরুর স্থান পরিবর্তন একদিনে ঘটে না। অর্থাৎ আমাদের হাতে এখনও সময় আছে।সূত্রঃ অনলাইন এবিপি আনন্দ
/এন এইচ