দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
হাসপাতালের টয়লেটে রোগীর আত্মহত্যা
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ শেরপুর জেলা হাসপাতালের পুরুষ সার্জিক্যাল ওয়ার্ডের টয়লেটের ভেন্টিলেটরের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় এক রোগীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ছয় সন্তানের জনক নিহত আব্দুল মালেক (৬৫) সদর উপজেলার লছমনপুর এলাকার ময়েজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় আইসক্রিম বিক্রেতা ছিলেন বলে তার স্ত্রী ফিরোজা বেগম জানিয়েছেন।
আব্দুল মালেক মুত্রথলির সমস্যা নিয়ে (প্রেস্টেট গ্ল্যান্ড বড় হয়ে যাওয়া) গত ২৬ অক্টোবর থেকে জেলা হাসপাতালের পুরুষ সার্জিক্যাল ওয়ার্ডের বি-১৩ নম্বর বেডে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতালের রেকর্ড অনুসারে তার নিবন্ধন নম্বর ৩৭৩৮৭/১৪।
হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে তার সঙ্গেই ছিলেন স্ত্রী ফিরোজা বেগম। তিনি জানান, বুধবার সন্ধ্যা থেকে তার স্বামী আব্দুল মালেক চার বার টয়লেটে যান। রাত সাড়ে নয়টার দিকে টয়লেটে যাওয়ার পর বেশ কিছুক্ষণ চলে গেলেও তিনি (আব্দুল মালেক) ফিরে আসেননি। তাই তিনি তাকে টয়লেটে খুঁজতে যান। সে সময় ভেন্টিলেটরে দড়ি বেঁধে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখতে পান। পরে চিৎকার দিলে হাসপাতালের অন্য রোগীর লোকজন ও নার্সরা তখন সেখানে দৌড়ে যান। সংবাদ পেয়ে জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দ্রুত সেখানে ছুটে যান। ঘটনাস্থলে হাজির হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বিল্লাল হোসেন এবং সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ পুলিশ কর্মকর্তারা।
জেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. খায়রুল কবীর সুমন জানান, নিহত ব্যক্তির চিকিৎসার কাগজপত্র দেখে জানা গেছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত ছিলেন। গত ২৬ অক্টোবর সকাল ৯টার দিকে মুত্রথলির জটিলতা নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার অবস্থা এখন ভালোর দিকে ছিল। এর আগে এক বার তার আলসারের অপারেশনও হয়েছিল। তিনি বলেন, হাসপাতালের টয়লেটে ফাঁস লাগিয়ে রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরে ছুটে আসি। পুলিশকে জানানোর পর তারা এসে লাশ উদ্ধার করেন।
জেলা হাসপাতালের ওই ওয়ার্ডের ডিউটি নার্স শিউলি বেগম বলেন, আমি তখন রোগীদের রাতের শিফটের ওষুধ দেওয়ার জন্য রাউন্ডে বারারন্দায় রোগীদের কাছে ছিলাম। হঠাৎ রাত সাড়ে নয়টার দিকে ওয়ার্ডের ভেতরে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে বারান্দা থেকে ওয়ার্ডের ভেতরে এসে টয়লেটে এক রোগীর গলায় ফাঁস লাগানোর কথা জানতে পারি। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জেলা হাসপাতালের টয়লেট থেকে নিহতের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে রোগ ভোগের কারণে মানসিক যন্ত্রণায় তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন। তবে লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
#এমএস