দেশজুড়ে

হত্যা মামলার পরোয়ানা নিয়ে কানাডা থেকে ফিরলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ছাত্রলীগের এক নেতাকে পায়ে গুলি করে ক্যাম্পাস ছাড়া করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। রয়েছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে হত্যার অভিযোগও। সেই কাণ্ডের পর কানাডায় পাড়ি দেন তিনি। সম্প্রতি সেই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়েই দেশে ফিরেছেন তিনি। তার নাম সোহেল শাহরিয়ার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা।

সূত্রের খবর, ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেপ্তার হওয়ায় তিনি চাইছেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণে নিতে। এ জন্য সহযোগীদের নিয়ে বেশ তৎপরতা চালাচ্ছেন সোহেল শাহরিয়ার। বিশেষ করে মতিঝিল, শাহজাহানপুর, খিলগাঁও ও পল্টন এলাকার অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, দক্ষিণ যুবলীগে নেতৃত্ব পেতেও চলছে তার লবিং।

কথিত আছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী জাফর আহম্মেদ ওরফে মানিকের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড সোহেল শাহরিয়ার। ধানম-ির ৩২ নম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনে হামলার ঘটনায় হওয়া মামলার অন্যতম আসামি তৎকালীন ফ্রিডম পার্টির নেতা মানিক পলাতক ও সাজাপ্রাপ্ত। তার হাত ধরেই অপরাধ জগতে উত্থান সোহেলের।

২০০৮ সালের ৪ মার্চ রাজধানীর শাহজাহানপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মতি-মহসিন কমিটির সদস্য ও ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. কাউছার আলীকে দিনেদুপুরে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডে নিহতের চাচা মো. আমির আলী মতিঝিল থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

মামলায় দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ২০১৬ সালে আদালতে যে চার্জশিট দাখিল করে, তাতে সোহেল শাহরিয়ারকেও আসামি করা হয়েছে। পুলিশের সেই তদন্তে ঘাতক হিসেবে সোহেল শাহরিয়ার ওরফে শটগান সোহেলের নাম উঠে এলে তিনি কানাডায় পালিয়ে যান। এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে শীর্ষ সন্ত্রাসী জাফর আহম্মেদ ওরফে মানিকের নাম উঠে আসে।বিদেশে পলাতক মানিকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি রয়েছে। হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সোহেল শাহরিয়ার মতিঝিল থানা ছাত্রলীগেরও সভাপতি ছিলেন। ২০০২ সালে ছাত্রলীগ নেতা মিজানকে গুলি করে হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের ক্যাম্পাস ছাড়া করে সোহেল শাহরিয়ার বনে যান কলেজের শীর্ষ নেতা।

নিহত কাউছার আলীর পরিবার হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছে ঘাতকদের অব্যাহত হুমকি আর অদৃশ্য চাপে। জানতে চাইলে কাউছার আলীর ভাই ইমরান আলী বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমাদের পরিবার অনেক ভোগান্তি পার করেছে। এখন এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর প্রথম দিনই রাজধানীর ফকিরাপুল ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালানো হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। খালেদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের অপরাধ জগতের তথ্য উঠে আসে গণমাধ্যমে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খালেদ-সম্রাট গ্রেপ্তারের খবর পেয়েই ঢাকায় ফেরা ও অপরাধ জগতের দখল নেওয়ার বিষয়ে নজর পড়ে সোহেল শাহরিয়ারের। দেশে ফেরার আগে কানাডায় বসেই ঢাকার সহযোগীদের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্দেশনা দেন। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান অস্ত্র মামলার এক আসামি। খালেদ-সম্রাটের অপরাধের খাতগুলোয় নজর তার। ইতোমধ্যে এসব এলাকার বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য অপরাধেও জড়িয়ে পড়েছে সোহেল শাহরিয়ারের নেতৃত্বাধীন গ্রুপ।

সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে মতিঝিল-শাহজাহানপুর এলাকায় চাঁদাবাজি-ডিশলাইনের ব্যবসাসহ বিভিন্ন সেক্টরে প্রভাব বলয় তৈরি করেছে এই গ্রুপ। খিলগাঁও-মতিঝিলের বিভিন্ন স্পটে ইতোমধ্যে তারা চাঁদা তোলা শুরুও করেছে। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে শীর্ষ সন্ত্রাসী মানিকের নাম।

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হত্যা মামলার আসামি সোহেল শাহরিয়ার কানাডা শাখা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকও নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে স্বেচ্ছাসেবক তৎকালীন কেন্দ্রীয় কমিটিকে ‘ম্যানেজ’ করে তিনি এ পদ বাগিয়ে নেন। তখন সংগঠনটির ভেতরেই এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা সোহেল শাহরিয়ার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়েও যে বহাল তবিয়তে দেশে ফিরেছেন, তা স্বীকার করেছেন এই প্রতিবেদকের কাছে। তিনি বলেন, ‘সবুজ সংকেত পেলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সোহেল শাহরিয়ারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি প্রথমে প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে কল বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে আবার ফোন করা হলে নম্বরটি সোহেল শাহরিয়ারের না বলে দাবি করা হয়।

জানতে চাইলে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সোহেল শাহরিয়ার দেশে ফিরেছে বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Related Articles

Leave a Reply

10 puikių virtuvės patarimų, kurie pakeis jūsų maisto gaminimo būdą! Atraskite naujus receptus ir išmokite, kaip nešvaistyti maisto produktų. Pasimokykite kaip priežiūrėti savo sodą ir pasėti daržoves tąsą metų sezonui. Sužinokite, kaip išnaudoti natūralius ingredientus maisto gamyboje ir kita daugelis naudingų patarimų! Mazāk aizsardzības, vairāk problēmu. Kāpēc viedtālruņa Pro vegetarianą: skanios žirnių sriubos receptas Kada geriausias laikas sodinti ir sekti: ką sako liaudies ženklai? Kodėl profesionalūs šefai Šeši įtikinami priežastys pasirinkti profesionalias remonto paslaugas Kas nutiks Visame virtuvės kvapas: receptas apelsininiai pyragai Ką darysite, jeigu neužsistatysite laikrodžio į vasaros laiką? Nepagalvoti Koks valandas turėtumėte vakarienėti, Gausus ir skanus: greito užkandžio receptas Kurį savaitės dieną negalite pasiskolinti Skani desertas atostogoms ir tiesiog džiaugsmui: kaip Vienas paprastas žingsnis Dortas su Coca-Cola Viščių munas ir jų valgymo gyvenimo Luksinės ir Apsauga ar pažeidimas: ar pavasarį verta Špinatinių blynelių Пагалба для ўсіх: лайфхакі, рэцэпты і карысныя артыкулы пра гарад на вашай гаспадыні
Close
Close