দেশজুড়ে
হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশনের সব কাজ হচ্ছে ঢাকাতেই
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ হজযাত্রীরা ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে সাত-আট ঘণ্টা সফর করে জেদ্দায় পৌঁছান এহরাম বাঁধা অবস্থায়। সেখানে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন শেষ হতে লাগে আরো সাত-আট ঘণ্টা সময়। পরে সেখান থেকে মক্কায় যেতে লাগে আরো তিন-চার ঘণ্টা। সব মিলিয়ে একজন হজযাত্রীকে ২৪ থেকে ২৫ ঘণ্টা রাস্তায় থাকতে হয়। এই ভোগান্তির অবসান ঘটেছে এবার। ঢাকা থেকে হজযাত্রীদের জন্য প্রথমবারের মত প্রি-ইমিগ্রেশন সেবার সুফল পাচ্ছে হজযাত্রীরা।
সৌদি আরব সরকারের ‘মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভ’-এর আওতায় বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশ থেকে ইমিগ্রেশনের যাবতীয় কাজ শেষ করে সৌদি আরব যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে হজযাত্রীরা। প্রথম দিন আশকোনায় হজ ক্যাম্পে এই সেবা আংশিক চালু হলেও সার্ভার জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি। তবে গত বৃহস্পতিবার থেকে সার্ভার জটিলতা কাটিয়ে হজযাত্রীদের সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভের আওতায় বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও তিউনিশিয়ার বিমানবন্দর হয়ে আসা দুই লাখ ২৫ হাজার হজযাত্রী এই সেবা পাবে। এতে হজযাত্রীরা নিজ দেশের বিমানবন্দরেই ভিসা ইস্যু, স্বাস্থ্যগত বিষয়, লাগেজ চেকিংসহ ইত্যাদি সুবিধা পাবে। তারা সৌদি আরব পৌঁছালে আর কোনো ধরনের প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়বে না। সরাসরি মক্কা ও মদিনায় চলে যেতে পারবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উপমহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার বলেন, ‘সৌদি সরকারের এই উদ্যোগে হজযাত্রীরা খুশি। প্রথম দিন সামান্য যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। পরদিন সকাল থেকে এই সেবা পুরোদমে শুরু হয় এবং আমাদের সম্মানীত হজযাত্রীরা ঢাকাতেই ইমিগ্রেশন করে জেদ্দা পৌঁছাচ্ছেন। হজ ক্যাম্পেই এই কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় আমি হজযাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখেছি। আসার সময় জেদ্দা থেকে ইমিগ্রেশন হবে।’
সূত্র জানায়, হজ সেবা উন্নয়নের জন্য ‘ভিশন ২০৩০’ গ্রহণ করেছে সৌদি আরব। এটির অধীনে পরিচালিত ‘মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভ ফ্রেমওয়ার্ক’ কর্মসূচির আওতায় ঢাকায় হজ ক্যাম্প ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এই সেবা দেওয়া হচ্ছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট হজযাত্রীর সংখ্যা প্রায় এক লাখ ২৬ হাজার। এর মধ্যে ৬০-৬৫ হাজার যাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছানোর আগেই ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের সুযোগ পাচ্ছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঢাকায় হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শুরু হলেও রবিবার সৌদি কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেছে। এখন পর্যন্ত এটি নির্বিঘ্নে চলছে। আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। এ বছর ৬৫ হাজার যাত্রী এই সুবিধা পাবে।’ বাকিদের জেদ্দা গিয়ে আগের নিয়মে ইমিগ্রেশন করতে হবে বলে তিনি জানান।