করোনাদেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
‘স্যরি পাপা, আল্লাহ মাফ করলে তোমার কথা শুনব’
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ‘পাপা তুমি বাইরে যেওনা। বাইরে করোনাভাইরাস। তুমি বাইরে গেলে করোনাভাইরাস হলে আমি কিছু জানি না। এভাবেই বলত আমার তিন বছর চার মাসের ছেলে রাফসান। এখন ওকে কী জানাব। শুধু বলব স্যরি পাপা, তোমার কথা মতো চলতে না পারার জন্য। আল্লাহ মাফ করলে তোমার সব কথা শুনব।’ করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. ইমরুল ইসলাম। তার এমন ফেসবুক স্ট্যাটাসে অনেকেই তাকে সাহস ও সমবেদনা জানাচ্ছেন। বর্তমানে ওই হাসপাতালে আইসিইউর বেড নম্বর-৭ রয়েছেন ইমরুল। আইসিইউতে স্থানান্তর হওয়ার আগে ওই স্ট্যটাস দেন তিনি।
হাসপাতালে শুয়েই আরও একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন- ‘ক্ষমা চাই মহান আল্লাহর কাছে। ক্ষমা চাই জন্মলগ্ন থেকে পরিচিত সবার কাছে। আমার অনুপস্থিতিতে আমার দুই সন্তান কারও কাছে আমার পরিচয়ে দিয়ে গেলে তাড়িয়ে দেবেন না, দয়া করে। আল্লাহ মহান। আমার শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। আইসিইউ বেড নম্বর-৭, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল।’
তার স্ট্যাটাস দেখে নুরুজ্জামান ফারুন নামে একজন লিখেন- ‘আমার ব্যাচমেট ইমরুল। এক সঙ্গে ট্রেনিং করেছি। ও খুব রশিক একটা মানুষ। ওকে দেখলে কেন যেন আমাদের খুব হাসি পেত। রাতের ক্লাসগুলো ওর গল্পে সময়টা কিভাবে পার হতো বুঝতে পারতাম না। ও খুব বাস্তববাদী ও সংগ্রামী একটা মানুষ। সব সময় খাঁটি বরিশালের ভাষায় কথা বলত। রাস্তায় মানুষকে ঘরে রাখতে লড়াই করতে গিয়ে নিজেই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন। সবার ভালোবাসা ও সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।’
সাদ্দাম হোসেন তুহিন নামে একজন লিখেন- ‘তোর আবেগপূর্ণ স্ট্যাটাসে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি।’ শরিফুল ইসলাম নামে একজন লিখেছেন- ‘সার্জেন্ট হিসেবে আপনি গুলিস্তান এরিয়ায় দায়িত্ব পালন করেছেন। বিভিন্ন সময় ফোন করলেও কখনো বিরক্ত হতেন না।’
ইমরুলের ফেসবুক প্রোফাইলে গিয়ে দেখা যায়- পড়াশোনা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে। গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী। জগন্নাথে পড়াশোনা করার সময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি।
রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক ডিআইজি হাসানুল হায়দার বলেন, আইসিইউতে পুলিশের যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা ক্রিটিকাল। অন্যদের অবস্থা স্থিতিশীল। ইমরুলের শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
/এন এইচ