দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি নিয়ে জাতীয় সংসদে সমালোচনার ঝড়
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি নিয়ে সংসদে সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা। তারা বলেছেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির ডিপোতে পরিণত হয়েছে। মন্ত্রী আসছে, মন্ত্রী যাচ্ছে কিন্তু দুর্নীতির সিন্ডিকেট বহাল তবিয়তেই থাকছে।’
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের একাদশ অধিবেশনে স্বাস্থ্যখাতের ‘দুর্নীতি’ নিয়ে সমালোচনা করেন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা। ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বিলে’র ওপর আনা সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে এই সমালোচনা শুরু হয়।
বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কি দুর্নীতির ডিপোতে পরিণত হয়নি? স্বাস্থ্য অধিদফতরে ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মেডিকেল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে? সেই সময় মন্ত্রী-সচিব বলেছে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় নাই। এখন সিআইডি বলছে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?’
সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিকেল কলেজ স্থাপন করে কি লাভ হবে? যদি তার সুফল সাধারণ মানুষ না পায়। মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেছেন, যখন করোনা এসেছে, তখন ব্যবস্থা আর অব্যবস্থাপনা কি এসব সম্পর্কে বিশ্ববাসীর কোনো ধারণাই ছিল না। আমিও একমত। এই সম্পর্কে বিশ্ববাসীর কোনো ধারণা ছিল না। কিন্তু ধারণা না থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের মন্ত্রীরা বলেছেন যে, ‘করোনার চেয়ে আমরা অনেক বেশি শক্তিশালী। বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে করোনা মোকাবিলায় আমরা অনেক বেশি সক্ষম’। তারা বলেছেন, ‘করোনা সর্দি-কাশির চেয়ে বেশি গুরুতর কোনো অসুস্থতা নয়।’ এসব তারা না জেনেই বলেছিল। আমাদের হাসপাতালে বেড সংখ্যা কত, আমাদের মাস্ক-পিপিই আছে কি না? আমাদের সেন্ট্রাল অক্সিজেন ফ্লো আছে কিনা। আমরা মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে পারব কিনা। আমাদের সেই সক্ষমতা আছে কিনা। ডাক্তার-নার্স অপ্রতুল নাকি যথেষ্ট সংখ্যক আছে, এসব কিছু না জেনেই তারা মন্তব্যগুলো করেছিলেন।”
বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, স্বাস্থ্যখাতে বেহালদশা। এ খাতের দুর্নীতি ফিরিস্তি বলে শেষ করা যাবে না। স্বাস্থ্যখাত দুর্নীতির ডিপোতে পরিণত হয়েছে। করোনার ভ্যাকসিন কত দামে কিনলাম? বাণিজ্য হচ্ছে কিনা জানা দরকার। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকরা ঠিকমত কাজ করছে কিনা? ডিউটির সময় অন্য জায়গায় প্রাকটিস করে। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বসে হাসপাতালের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির ডিপো হয়ে গেছে।
গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, ‘বড় বড় প্রকল্পগুলো সাধারণত মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা নীতি-নির্ধারণীতে থাকেন, তারপর এটা পাস হয়। কিন্তু এটা বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকেন আমাদের সচিব সাহেবরা। প্রজেক্ট ডাইরেক্টর সাহেবরা। কিন্তু যারা বাস্তবায়নে থাকেন। তাদের হাত দিয়েই বড় বড় দুর্নীতি হয়। আজ পর্যন্ত একটি নজিরও নাই যে, একজন প্রকল্প পরিচালক বা একজন সচিব; যার দায়িত্বে অবহেলার জন্য দৃষ্টান্তমূলক কোনো শাস্তি হয়েছে। সব দোষ আসে মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য বা রাজনীতিবিদদের ওপর। এতো শক্তিশালী আমলাতন্ত্র মনে হয় পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন।’
/আরএম