দেশজুড়ে
স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের প্রতিবাদ করে ৯৯৯-এ কল, স্ত্রীকেই আটক!
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলার শিকার এক নারী ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেওয়ায় অপরাধীকে না ধরে উল্টো ওই নারীকেই থানায় প্রায় ১০ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। শুধু তাই নয় আরও অভিযোগ, ওই স্বামী শিবির নেতা ও নাশকতার মামলার আসামি হলেও বিয়ের অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে করার জন্য তার বাড়ি পাহারা দিয়ে রাখেন গোমস্তাপুর থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বেগুননগর গ্রামের আব্দুল করিম মাস্টারের ছেলে নাসিমুল হুদা শুক্রবার রাতে দ্বিতীয় বিয়ে করেন এবং শনিবার ছিল তার বৌভাতের অনুষ্ঠান। এদিকে বিষয়টি জানতে পেরে নাসিমুল হুদার প্রথম স্ত্রী আফরোজা বেগম বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে স্বামী নাসিমের বাড়িতে যান।
এই নিয়ে প্রতিবাদের এক পর্যায়ে নাসিমসহ তার বাড়ির লোকজন আফরোজাকে মারপিট করে আহত করে। একপর্যায়ে জীবন বাঁচাতে সহযোগিতার আশায় ৯৯৯ নম্বরে কল দেন আফরোজা। পরে সেখানে অবস্থানরত ওসি মো. জসিম উদ্দিন ৯৯৯ থেকে কল রিপ্লাই পেয়ে আফরোজাকে আটক করে গোমস্তাপুর থানায় নিয়ে এসে থানা হাজতে প্রায় ১০ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখেন।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে নারী পুলিশসহ ৪-৫ জন পুলিশ সঙ্গে নিয়ে বিয়ে বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন ওসি মো. জসিম উদ্দিন। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় একটি বিলে মাছ চাষের ঘটনার বিবাদকে কেন্দ্র করে নাসিমের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে ওসি মো. জসিম উদ্দিনের। আর তার দ্বিতীয় বিয়ের বৌভাত অনুষ্ঠানে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে সেই আশংকায় সকাল থেকে তিনি ফোর্স নিয়ে বন্ধু নাসিমের বাড়িতে অবস্থান নেন। বিকেল ৪টার দিকে নাসিমের প্রথম স্ত্রী আফরোজা বেগমকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে এ খবর গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে পৌঁছালে শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে আফরোজাকে তার বাড়িতে দিয়ে আসে গোমস্তাপুর থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে গোমস্তাপুর থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাড়ি পাহারার বিষয়টি অস্বীকার করে ঘটনাস্থলে ছিলেন না বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ফোন পাওয়ার পর ওই নারীকে বাঁচাতে ঘটনাস্থল থেকে নারী পুলিশের মাধ্যমে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং রাতে তার পরিবারের জিম্মায় তাকে তুলে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার এএইচএম আব্দুর রকিব বলেন, ওই নারী ঘটনাস্থলে গিয়ে হট্টোগোলের সৃষ্টি করলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাকে থানায় নিয়ে যায় এবং রাতে তার পরিবারের কাছে তাকে হস্তান্তর করে। এর আগে তার বোন ভোলাহাট উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে বারবার ফোন করলেও তিনি থানায় যাননি। কিন্তু পরে তার বোন বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
/আরএম